নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ থেকে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি (ওএমএস) করবে রাষ্ট্রয়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সম্প্রতি পেঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সরকার খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। তারই অংশ হিসেবে আজ থেকে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু। টিসিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
টিসিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ রোববার থেকে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পেঁয়াজের পাশাপাশি চিনি, মসুর ডাল ও বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করবে টিসিবি। সপ্তাহে প্রতি শুক্র ও শনিবার ছাড়া অন্যান্য পাঁচ দিন এসব পণ্য বিক্রি চলবে, যা আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
টিসিবির ট্রাক থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ক্রেতা কিনতে পারবেন ৩০ টাকায়। তবে একজন ক্রেতা দুই কেজির বেশি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন না। এছাড়া প্রতি কেজি চিনি পাওয়া যাবে ৫০ টাকায়, যা একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই কেজি কিনতে পারবেন। মসুর ডাল ৫০ টাকা কেজিতে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই কেজি নিতে পারবেন। এছাড়া সয়াবিন তেল ৮০ টাকা লিটারে একজন ক্রেতা দুই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার নিতে পারবেন।
টিসিবি জানিয়েছে, দেশব্যাপী ২৭৫ জন ডিলারের ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এ বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। এরমধ্যে ঢাকায় ৪০টি, চট্টগ্রামে ১০, রংপুরে সাত, ময়মনসিংহে পাঁচ, রাজশাহীতে পাঁচ, খুলনায় সাত, বরিশালে পাঁচ, সিলেটে পাঁচ, বগুড়ায় পাঁচ, কুমিল্লায় পাঁচ, ঝিনাইদহে তিন ও মাদারীপুরে তিনটি করে মোট ১০০টি ট্রাক থাকবে।
অন্যান্য জেলার প্রতিটিতে দুটি করে ১০৪টি এবং আঞ্চলিক কার্যালয়ের আওতাভুক্ত উপজেলার জন্য পর্যায়ক্রমে অতিরিক্ত পাঁচটি করে মোট ৬০টি ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। এছাড়া বন্যাকবলিত জেলা তথা ময়মনসিংহে চারটি, রংপুরে চারটি, বগুড়ায় তিনটি, মাদারীপুরে অতিরিক্ত দুটি করে ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হবে। প্রতিদিনের পণ্য বিক্রির স্থান ও ডিলারদের ফোন নম্বর টিসিবির ওয়েবসাইটে ওই দিনই বেলা ১১-১২টার মধ্যে আপলোড করা হবে।
ঢাকা নগরীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রয়ের স্থানগুলো হলো সচিবালয় গেট, যাত্রাবাড়ী বাজার, ইত্তেফাক মোড়, শান্তিনগর বাজার, শাহজাহানপুর বাজার, খামারবাড়ী ফার্মগেট, মিরপুর-১৪ কচুক্ষেত, মিরপুর-১ মাজার রোড, শ্যামলী মোড়/ন্যাম গার্ডেন, উত্তরা আবদুল্লাহপুর, ভিকারুন নিসা নূন ১০ নাম্বার গেট/ইস্টার্ন হাউজিং গেট, বেগুনবাড়ী, মতিঝিল সরকারি কলোনি, ভাষানটেক বাজার, মধ্য বাড্ডা, পলাশী/ছাপড়া মসজিদ, জিগাতলা/ধানমন্ডি সরকারি কলোনি, রামপুরা বাজার, মাদারটেক/নন্দীপাড়া/কৃষি ব্যাংকের সামনে, আদাবর বা মনসুরাবাদ, বাংলা কলেজ, শাহ সাহেব মাঠ আজিমপুর বটতলা, আশকোনা হাজী ক্যাম্প, বাসাবো বাজার, আজমপুর, ডিসি অফিস, সাতারকুল, বাংলাদেশ ব্যাংক, মিরপুর-২/১২, মাতুয়াইল/সিদ্ধিরগঞ্জ, ইসিবি/কালসি, গাবতলী/টেকনিক্যাল, কাপ্তানবাজার, সোয়ারীঘাট/নবাবগঞ্জ সেকশন, বনশ্রী বাজার, কলমিলতা বাজার, কারওয়ান বাজার, দিলকুশা, মেরাদিয়া বাজার, নিপ্পন বটতলা, খিলগাঁও তালতলা, মুগদা, নিউমার্কেট, টঙ্গী বাজার, শনিরআখড়া, বছিলা, কামরাঙ্গীর চর লোহারপুল, সারুলিয়া বাজার, টঙ্গী বাজার, ৬০ ফিট ভাঙা মসজিদ, গোপীবাগ খোকন কমিউনিটি সেন্টার, গুলশান ভাটারা বাজার, সাভার বাজার, আনন্দ সিনেমা হল, মগবাজার ফরচুন মার্কেট, হাতিরপুল বাজার, মালিবাগ বাজার, উত্তর বাড্ডা ও খিলক্ষেত বাজার।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানির ওপর ধার্যকৃত পাঁচ শতাংশ শুল্ক মওকুফের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং আইপি ও কোয়ারেন্টাইন বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ভারতে মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় আমদানি সীমিত হয়ে পড়ে। আর এ সুযোগে দেশের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেন। গত এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি দেমি পেঁয়াজের দাম ছিল খুচরা পর্যায়ে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও ৭০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হয়। আর ২৫ থেকে ৩০ টাকার বিদেশি পেঁয়াজ বর্তমানে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।