আজ বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিবারের মতো এবারও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে পালন করা হচ্ছে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত টিসিবি ভবনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীতে তার স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গ করে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার- সুরক্ষিত ভোক্তা অধিকার’।

জনগণকে অধিকতর সচেতন করার উদ্দেশে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। ভোক্তা-অধিকারবিষয়ক যে কোনো অভিযোগ জানাতে ১৫ মার্চ একটি ‘ভোক্তা বাতায়ন’ হটলাইন নম্বর উদ্বোধন করা হবে।

ক্রেতারা বাজার থেকে একদিকে ভালো পণ্য ক্রয় করতে পারছে অন্যদিকে খারাপ পণ্যও পাচ্ছে। আবার অনেক ক্রেতা পণ্য ক্রয় করে নানা প্রকার প্রতারিত হচ্ছেন এবং অনেক বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাড়তি মূল্যে পণ্য বিক্রি করছেন। কোনো সাধারণ ব্যক্তি যদি এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার হন তাহলে যেন মুহূর্তেই সেই বিষয়ে প্রতিকার পান সেজন্য এ হটলাইন চালু করা হচ্ছে।অতিদ্রুত অনলাইনের মাধ্যমে ভোক্তারা এ সেবা গ্রহণ করতে পারবে।

ভোক্তা-অধিকারবিষয়ক সচেতনতা কার্যক্রম হিসেবে ঢাকা মহানগরের আটটি স্থানে ভ্রাম্যমাণ জারি গান পরিবশন করা হবে। সেই সঙ্গে দেশব্যাপী দিবসটি উদ্যাপন করা হবে। বিশ্ব ভোক্তা-অধিকার দিবস উপলক্ষে নানা আয়োজন করা হলেও করোনাভাইরাসের কারণে বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা ও অনান্য কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, ‘আসন্ন মাহে রমজান ও বছরব্যাপী আমরা একত্রে কাজ করে দেশের ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণের বিষয়ে উৎপাদক/আমদানি থেকে শুরু করে ভোক্তাপর্যায়ে পণ্যের মূল্য নির্ধারণের জন্য সরকারের বিশেষ উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ‘ভোক্ত-অধিকার দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ভোক্তা-অধিকার অধিদপ্তর ভোক্তা ও ব্যবসায়ী উভয়পক্ষের দিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ শুধু অভিযোগ পেলেই অভিযান পরিচালনা করে না, দেশের যে কোনো সময়ে দিনে/রাতে অভিযান পরিচালনা করে। নিয়মিতভাবে প্রতি বুধবার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা হচ্ছে এবং ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯-এর ১৭টি ধারার আলোকপাতে ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সালের ৮ মার্চ পর্যন্ত জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ২৬ হাজার ৩৯৪টি বাজারে অভিযান চালিয়েছে, যেখানে দণ্ডিত করা হয়েছে ৭৪ হাজার ২১০টি প্রতিষ্ঠানকে এবং জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫৫ কোটি ৬০ লাখ তিন হাজার ৬৪২ টাকা। এ সময়কালে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ এসেছে ৩০ হাজার ২৯৫টি, তার মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে ২৮ হাজার ৫৮৯টি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ছয় হাজার ৪৬টি প্রতিষ্ঠানকে দণ্ডিত করা হয়েছে এবং চার কোটি ২০ লাখ ৭১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অনিসম্পন্ন অভিযোগ রয়েছে এক হাজার ৭০৬টি। মোট জরিমানার পরিমাণ ৫৯ কোটি ৮০ লাখ ৭৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এদিকে অভিযোগ প্রদানকারী ব্যক্তিদের এখন পর্যন্ত এক কোটি তিন লাখ ৯০ হাজার ৭৫২ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। সে হিসেব অনুযায়ী পাঁচ হাজার ৯৬৫ জন ব্যক্তিকে টাকা ফেরত পেয়েছে, যা গড়ে ২৫ শতাংশ লোক এ হিসাব পেয়েছেন। এছাড়াও ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন সময় পোস্টার, প্যাম্পলেট, লিফলেট, স্টিকার ও ক্যালেন্ডার বিতরণ করে আসছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০