আট বছরেও শুরু হয়নি বিটিআরসির ভবন নির্মাণকাজ

হামিদুর রহমান: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নিজেদের প্রধান কার্যালয় নির্মাণে ২০০৮ সালে শেরেবাংলা নগর এলাকায় সরকারের কাছ থেকে এক কোটি ৮২ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি  কেনে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখারও পরিকল্পনা করা হয়। এরপর প্রাথমিক কাজের একটু উন্নতি হলেও গত আট বছরেও শুরু হয়নি বিটিআরসি ভবন নির্মাণকাজ।

জানা যায়, সরকারি অর্থায়নে ভবনটি নির্মাণে বিটিআরসি ২০১৬ সালের আগস্টের শুরুতে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠানো হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে। এছাড়াও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণয়ন করা বিটিআরসির ডিপিপি ভৌত অবকাঠামো বিভাগ পরিকল্পনা  কমিশনে প্রেরণ করে। ইতোমধ্যে স্থাপত্য অধিদফতর, গণপূর্ত অধিদফতর, বিটিআরসি, পিটিডি ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বয়ে ২০১৭ সালের প্রথম দিকে বিটিআরসির ভবন নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। পিইসি সভার নির্দেশনা অনুযায়ী বিটিআরসি কর্তৃক ইতোমধ্যে স্থাপত্য অধিদফতরের মাধ্যমে প্রস্তাবিত ভবনের নকশা পুনরায় সংশোধন করা হয় এবং গণপূর্ত অধিদফতরের মাধ্যমে পুনরায় ২০২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়।

বিটিআরসি সূত্রমতে, সরকার কর্তৃক বিটিআরসির বরাদ্দ করা জমিতে নিজস্ব ভবন নির্মাণ দ্রুত সম্পন্নের লক্ষ্যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভায় প্রদত্ত নির্দেশনা মোতাবেক সংশোধিত ২০২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপি পুনরায় প্রেরণ করে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানায় সংস্থাটি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৩ তলা ভবনটিতে তিনটি বেজমেন্ট রাখা হয়েছে। আর এ ভবনেই থাকবে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির কার্যালয়। পাশাপাশি দেশের বেসরকারি টেলিকম কোম্পানিগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে তাদেরও কার্যালয় স্থাপনের সুযোগ থাকবে।

বিটিআরসি জানায়, ভবন নির্মাণে সবাই পজিটিভ কিছু বিষয়ের কারণে নির্মাণকাজ পিছিয়ে রয়েছে। আমাদের নিজেদের ভবন হলে প্রতি মাসের অফিস ভাড়া বাবদ ব্যয় হওয়া বিপুল অর্থ বাঁচাতে পারব এবং নতুন ভবনের অতিরিক্ত অংশ ভাড়া দিয়েও সরকারের রাজস্ব হিসেবে প্রচুর টাকা আয় হবে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছি এবং ইতিবাচক সাড়াও পেয়েছি। আশা করা যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টমতলা তিন বছরের জন্য ভাড়া নেয় বিটিআরসি। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন করে পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করা হয়। এ সময় আগের চেয়ে ভাড়া ১৫ শতাংশ বাড়িয়ে অফিসের ভাড়া প্রতি বর্গফুট ৩৬ টাকা ৮০ পয়সা এবং বেজমেন্টের ভাড়া ১৭ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। চুক্তিতে এক বছর পরপর উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনাসাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির সুযোগ রাখা হয়। ২০১৩ সালে আইইবি’র নতুন কমিটি বিটিআরসি কার্যালয়ের ভাড়া ১০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসির ১৫৭তম কমিশন সভার অনুমোদনক্রমে ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে অফিসের জন্য প্রতি বর্গফুট ৩৯ টাকা ৭৪ পয়সা এবং বেজমেন্টের জন্য ১৮ টাকা ৬৩ পয়সা হারে ভাড়া পরিশোধ করে আসছে। এক বছর পর আইইবি আবার ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দিলে বিটিআরসি ১০ শতাংশের পরিবর্তে পাঁচ শতাংশ হারে বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। পরে আইইবি’র সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে আট শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। ফলে বিটিআরসি’র প্রধান কার্যালয়ের ভাড়া দাঁড়িয়েছে মাসে ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, যা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। এ হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক অফিস ভাড়া দাঁড়ায় ৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০