আতঙ্ক বাড়াচ্ছে মৌলভিত্তিসম্পন্ন শেয়ারের দরপতন

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: কিছুতেই থামছে না পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দরপতন। বরং ক্রমেই পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। নতুন বছরের শুরু থেকে ছোট ছোট কোম্পানির পাশাপাশি মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে। ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেও প্রতিদিনই পুঁজি উধাও হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। যে কারণে তাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়ছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, নতুন বছরের শুরু থেকে বহুজাতিক ও মৌলভিত্তিসম্পন্ন প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর নি¤œমুখী রয়েছে। ফলে যেসব বিনিয়োগকারী দুর্বল কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন, তাদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। আর এর জেরে তাদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে। তাদের অভিমত, ভালো কোম্পানির শেয়ারের দরপতন বাজারের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। চলমান দরপতনের শেষ কোথায়Ñসেটাই এখন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এক মাসের বাজারচিত্রে দেখা যায়, তালিকাভুক্ত গ্রামীণফোন, আইসিবি, ইফাদ অটোস, লংকাবাংলা, আইডিএলসি, সিটি ব্যাংকসহ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর কমেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এ সময়ের মধ্যে ইফাদ অটোসের প্রতিটি শেয়ারের দর কমেছে ২০ টাকা বা ১৮ শতাংশ। এক মাস আগে এ শেয়ারের দর ছিল ১৩১ টাকা। গতকাল যা লেনদেন হয় ১১১ টাকা ৪০ পয়সায়।

একই সময়ের লংকাবাংলার প্রতিটি শেয়ারের দর কমেছে ৩৪ শতাংশ বা ১২ টাকা। এক মাস আগে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয় ৪৪ টাকা ৭০ পয়সায়। দরপতনের জেরে গতকাল যা লেনদেন হয় ৩৫ টাকা ৭০ পয়সায়। এ ছাড়া এক মাসের ব্যবধানে বিবিএস কেব্লের শেয়ারের দর কমেছে ২৮ শতাংশ। বর্তমানে  এ শেয়ার ৮২ টাকা থেকে ৮৩ টাকার মধ্যে কেনাবেচা হচ্ছে।

অন্যদিকে মাসের ব্যবধানে আইডিএলসির শেয়ারের দর কমেছে ১৫ শতাংশ। গতকাল এ শেয়ার ৭১ টাকায় লেনদেন হয়। অথচ এক মাস আগে এর দর ছিল ৮১ টাকা ১০ পয়সা। এ সময়ের মধ্যে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দর কমেছে প্রায় আট শতাংশ। স্কয়ার ফার্মার শেয়ারদর কমে পাঁচ শতাংশের বেশি। একইভাবে তালিকাভুক্ত সিটি ব্যাংকের শেয়ারদর কমে ১৮ শতাংশ। বর্তমানে এ শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৩৮ থেকে ৩৯ টাকার মধ্যে। এক মাস আগে যার দর ছিল ৪৬ টাকা।

বিষয়টি নিয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ বলেন, ‘এখন পুঁজিবাজারের দরপতন হওয়ার কোনো যুক্তি নেই। কারণ বর্তমানে তালিকাভুক্ত প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর বিনিয়োগের অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থায় যে পতন চলছে, তা অস্বাভাবিক। এমন পরিস্থিতিতে বিএসইসিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত বাজারের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া।’

একই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৌলভিত্তিসম্পন্ন একটি কোম্পানির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাজার নিয়ে একটি চক্র খেলা করছে। বিএসইসি চাইলে সহজেই এদের শনাক্ত করতে পারে। কারণ কোন হাউজ থেকে অস্বাভাবিক লেনদেন হচ্ছেÑতা সহজে বের করতে পারে এ প্রতিষ্ঠান। আর এভাবেই কারসাজিকারীদের বের করা সম্ভব। কিন্তু তারা সেটা করছে না। যে কারণে থামছে না পতন।’

এদিকে দরপতন নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ‘বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দরপতন ঠেকাতে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, বিএসইসি, আইসিবি, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের এমন পরিস্থিতিতে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০