আত্মহত্যা কখনও সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাধান হতে পারে না, বরং সমস্যার কাছে মাথা নত করে নেয়ার একটা ব্যর্থ প্রক্রিয়া। একজন বীর পুরুষ কখনও আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে না। কাপুরুষেরা বারবার হেরে যায়, শির নত করে বারবার, অল্পতেই হতাশ হয়ে যায়, আত্মহত্যার মাঝে ব্যর্থ সমাধান খোঁজে।
মানুষের সমগ্র জীবনটাই একটা পরিপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র। প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয় বুক চিতিয়ে, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে হয়, স্বাগতম জানাতে হয়। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার মাঝেই জীবনের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করা সম্ভব।
আত্মহত্যা মহাপাপ। ইসলাম কখনও আত্মহত্যার মতো কোনো অপরাধকেই সমর্থন করে না। এ ধরনের কর্ম থেকে বিরত থাকার গুরুত্ব প্রদান করে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে ঘোষণা করেনÑ‘তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল।’ (সুরা নিসা: আয়াত ২৯)
তবুও মানুষ আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথ বেছে নিতে দ্বিধাবোধ করে না। বিগত বছরগুলোয় আত্মহত্যার মিছিল বেড়েই চলেছে। কোনো ক্রমেই যেন এই হার কমছে না। সম্প্রতি আঁচল ফাউন্ডেশন এক সমীক্ষা প্রকাশ করেন। আট মাসে আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬৪, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে স্কুলের শিক্ষার্থী। ১৯৪ স্কুলশিক্ষার্থীর জীবনপ্রদীপ নিভে যায় এই ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। এই তালিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে আছে কলেজ শিক্ষার্থী, ৭৬ জন আত্মহত্যার মাধ্যমে জীবনের অধ্যায় চুকিয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিন্তা-ভাবনায় অনেক এগিয়ে, নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় নিয়মিত ব্যস্ত?। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীও এই ভুল পথে পা বাড়িয়েছে, যা অনেক বেশি হতাশার। নিজের ভালো-মন্দ বুঝতে পেরেও এভাবে নিজেকে শেষ করে দেয়ার বিষয়টি মেনে নেয়া কষ্টকর। এছাড়া মাদরাসার ৪৪ শিক্ষার্থীও এই পথের যাত্রী হয়েছেন।
জুবায়েদ মোস্তফা
শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়