আত্মীয় ছাড়া অন্যরাও কিডনি দিতে পারবেন: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক : মানবিক বিবেচনায় ও সহানুভূতিশীল যে কেউ অন্যদের কিডনি দিতে পারবেন। তবে মাদকাসক্ত ও কিডনি কেনাবেচা করেনÑএমন ব্যক্তিদের কিডনি নেওয়া যাবে না।

‘অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন, ১৯৯৯’-এর ২ (গ), ৩ ও ৬ ধারা কেন সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল এ রায় ঘোষণা করা হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

গতকাল আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খোন্দকার নীলিমা ইয়াসমিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ।

২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট ‘অঙ্গ-প্রতঙ্গ সংযোজন আইন, ১৯৯৯’-এর ২ (গ), ৩ ও ৬ ধারা কেন সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ফাতেমা জোহরা নামে এক নারী ২০১৫ সালে তার মেয়ে ফাহমিদাকে একটি কিডনি দান করেন। তা সত্ত্বেও মেয়ের কিডনি অকেজো হয়ে যায়। এরপর কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দাতা পেলেও আইনগত বাধায় মেয়েকে কিডনি দিতে না পেরে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

চলতি বছরের ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত জানতে চান। আদেশের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রো-ভিসি ও বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলমের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

অন্য ছয় সদস্য হলেনÑকিডনি ফাউন্ডেশনের চিফ কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশিদ, বিএসএমএমইউর নেপ্রোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আসিয়া খানম, বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম খুরশিদুল আলম, বারডেম হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মির্জা এমএইচ ফয়সাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম এবং জাতীয় কিডনি ডিজিজেস ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল হুদা।

৭ নভেম্বর কিডনি প্রতিস্থাপন বিষয়ে সাত সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটি আদালতে তাদের মতামত দেন। মতামতে তারা বলেন, আত্মীয় নয় এমন কারও কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন নেই। আইনের বাইরে অন্য কারও কিডনি প্রতিস্থাপনের সুযোগ তৈরি হলে দেশের দরিদ্র মানুষের জীবন সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। ধনীরা বাণিজ্যিকভাবে এর ব্যবহার শুরু করবে। এতে অঙ্গ-প্রতঙ্গ পাচারের মাত্রা বাড়বে।

তবে বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, মানবদেহে অঙ্গ-প্রতঙ্গ সংযোজন বিষয়ে বিদ্যমান আইন সংশোধন হওয়া প্রয়োজন। কারণ, এ আইনে নিকটাত্মীয় ছাড়া অন্য কারও অঙ্গ-প্রতঙ্গ দানের সুযোগ রাখা হয়নি। তাই একজন সুস্থ মানুষ চাইলে অন্য কাউকে তার অঙ্গ দান করতে পারবেনÑএমন আইন থাকা উচিত।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০