নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ প্রবেশ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর হয়ে। হঠাৎ এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট থেকে গড়ে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট আগে থেকেই বন্ধ। এর মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটে ত্রুটি দেখা দেয়ায় গতকাল শুক্রবার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। পুনরায় কবে উৎপাদন শুরু হতে পারে, তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের রাষ্ট্রীয় সঞ্চালন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তাদের ভাষ্য, দ্বিতীয় ইউনিটে কারিগরি ত্রুটির কারণে ২৫ জুন থেকে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে যায়। ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছিল, কিন্তু গতকাল সকাল ৯টা ৪৩ মিনিটে এটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ত্রুটি অনুসন্ধান করে দেখছে কেন্দ্রটি।
এর আগে ঈদের ছুটির সময় চাহিদা কম থাকায় রক্ষণাবেক্ষণে যায় আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। এটি আগামী ৫ জুলাই উৎপাদনে ফিরতে পারে। দুটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদনসক্ষমতা ৮০০ মেগাওয়াট করে। হঠাৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এছাড়া পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬২২ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ইউনিট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২৫ জুন থেকে বন্ধ। এতে ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং দেখা দেয়। তবে গতকাল শনিবার বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কমে কিছুটা স্বস্তি নেমে আসে।
পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ৫ জুলাই উৎপাদনে আসার কথা। আর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে হঠাৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদনে ফেরার সময় এখনও তারা জানাতে পারেননি।
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে গড়ে ৭৫০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয় গত বছরের মার্চে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয় জুনে। এর কিছুদিন পর জুনেই ঝড়ের কারণে রহনপুরে সঞ্চালন লাইন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়েছিল। এরপর ত্রুটি ঠিকঠাক করলে আবার উৎপাদন শুরু হয় কেন্দ্রটির। এতে ওই সময় কয়েক দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছিল।