আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধে রেকর্ড লোডশেডিং

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। তবে সে অনুপাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। এতে গত কয়েকদিন ধরেই দেশব্যাপী ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে। এর মধ্যে ২৯ এপ্রিল কারিগরি ত্রুটিতে বন্ধ হয়ে যায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র। ভারতের ঝাড়খণ্ডের কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ আসা বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার বছরের সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয় দুপুর ২টায়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায়, কারিগরি ত্রুটির কারণে ২৯ এপ্রিল সকাল ৮টা ৪৯ মিনিটে বন্ধ হয়ে যায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর আগে কেন্দ্রটি থেকে এক হাজার ৫০৪ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল। হঠাৎ জাতীয় গ্রিডে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে ন্যাশনাল লোড ডেসপাচ সেন্টার (এলএনডিসি)। এতে সারাদেশে লোডশেডিংয়ের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়। এমনকি ঢাকাতেও লোডশেডিং করা হয়।

দুপুর ১টা ৪২ মিনিটে আদানির বিদ্যুৎ আসা শুরু হলেও পরিমাণে ছিল অনেক। বেলা ২টায় আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় মাত্র ৩৩ মেগাওয়াট, বেলা ৩টায় ৯৯ মেগাওয়াট ও বিকাল ৪টায় ২১৭ মেগাওয়াট। এভাবেই আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্রমেই বাড়তে থাকে। বিকাল ৫টায় কেন্দ্রটি থেকে পাওয়া যায় ৪১২ মেগাওয়াট, সন্ধ্যা ৬টায় ৫১১ মেগাওয়াট ও ৭টায় ৭২৩ মেগাওয়াট। রাত ৮টায় আসে ৯১৩ মেগাওয়াট, ৯টায় ৯৫৮ মেগাওয়াট, ১০টায় এক হাজার ১৫১ মেগাওয়াট ও ১১টায় এক হাজার ১৮৫ মেগাওয়াট।

রাত ১২টায় প্রায় স্বাভাবিক হয় আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ। ওই সময় কেন্দ্রটি থেকে আসে এক হাজার ২১২ মেগাওয়াট। তবে মাঝে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার পাশাপাশি ২৯ এপ্রিল দুপুরে বিভিন্ন জেলার তাপমাত্রা প্রচণ্ড বৃদ্ধি পায়। এ সময় চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা ছিল দেশের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ঢাকাতেও ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা ছিল রাজধানীর ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ।

অত্যাধিক তাপমাত্রায় বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় ওই সময়। ফলে লোডশেডিংয়েও রেকর্ড হয়। ২৯ এপ্রিল বেলা ২টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ১২ হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট। সে সময় লোডশেডিং করা হয় তিন হাজার ১৯৬ মেগাওয়াট। এটি ২০২৪ সালে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ লোডশেডিং। এছাড়া বেলা ৩টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ১৩ হাজার ১৫ মেগাওয়াট। সে সময় লোডশেডিং করা হয় তিন হাজার ৪২ মেগাওয়াট। তবে বিকাল ৪টা থেকে ক্রমেই উৎপাদন বাড়ায় এবং তাপমাত্রা কমে থাকায় লোডশেডিং হ্রাস পায়। বিকাল ৪টায় লোডশেডিং ছিল দুই হাজার ৯২৯ মেগাওয়াট।

পিডিবি সূত্র জানায়, ২৯ এপ্রিল রাত ১০টায় এক হাজার ৫০২ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। এরপর চাহিদা বৃদ্ধি ও সে অনুপাতে উৎপাদন না হওয়ায় আবার লোডশেডিং বাড়তে থাকে। এতে ৩০ এপ্রিল (২৯ এপ্রিল দিবাগত) রাত ১টায় লোডশেডিং হয় দুই হাজার ২৪৩ মেগাওয়াট। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত এটি ছিল গতকালের সর্বোচ্চ লোডশেডিং। এছাড়া গতকাল দুপুর ৩টায় দুই হাজার ৩১ মেগাওয়াট, বিকাল ৪টায় দুই হাজার ১০০ ও ৫টায় দুই হাজার ৪২ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। অন্যান্য সময় লোডশেডিং দুই হাজার মেগাওয়াটের নিচে ছিল।

এদিকে ২৮ এপ্রিল সর্বোচ্চ লোডশেডিং ছিল বেলা ৩টায় দুই হাজার ৩৬৬ মেগাওয়াট। ওইদিন বিকাল ৪টায় দুই হাজার ৩৪৮ ও ৫টায় দুই হাজার ১১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। এর আগের দিন (২৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টায় সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয় এক হাজার ৭১৭ মেগাওয়াট এবং ২৬ এপ্রিল রাত ২টায় এক হাজার ৫৫৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০