শেয়ার বিজ ডেস্ক:অরগানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ভারতের আদানি গোষ্ঠীর আর্থিক লেনদেন নিয়ে তদন্ত করেছে। তাদের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল মরিশাসের একটি তহবিল থেকে। সেই তহবিলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আদানি পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী অংশীদাররা। খবর: দ্য গার্ডিয়ান ও রয়টার্স।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আদানি পরিবারের ঘনিষ্ঠ লোকজন বছরের পর বছর ধরে গোপনে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কিনেছেন। ঠিক সেই সময় আদানির উত্থান হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চও চলতি বছরের জানুয়ারিতে একই অভিযোগ তুলেছিল। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে আদানি গোষ্ঠী। সেই প্রতিবেদনের জেরে গোষ্ঠীটির বাজার মূলধন ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি কমে যায়। ব্যক্তিগত সম্পদ হারান গৌতম আদানি।
হিনডেনবার্গের অভিযোগ ছিল, নিজেদের শেয়ার ঘুরপথে কিনে দাম বাড়াত আদানি গোষ্ঠী। অর্থাৎ গোষ্ঠীটি শেয়ার জালিয়াতি করত। গৌতম আদানি ওই অভিযোগ নাকচ করে দিলেও এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়। এবার সেই তদন্ত চলাকালে সামনে এল ওসিসিআরপির এ প্রতিবেদন।
বিভিন্ন করসংক্রান্ত নথিপত্র ও আদানি গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ ই-মেইলের ভিত্তিতে এ অস্বচ্ছ লেনদেনের অভিযোগ তুলেছে ওসিসিআরপি। এটি একটি অলাভজনক মিডিয়া সংস্থা। তাদের অভিযোগ, অন্তত দুটি ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অস্বচ্ছভাবে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কেনাবেচা করা হয়েছে। এতে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম তরতর করে বেড়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে গৌতম আদানি বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনীর স্থানে উঠে আসেন। এরপর হিনডেনবার্গ ঝড়ে অবশ্য সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
ওসিসিআরপির নথিতে দেখা গেছে, এসব অফশোর কর্মকাণ্ডে গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানি প্রভাবশালী ভূমিকা রেখেছেন। তবে এ বিষয়ে আদানি গোষ্ঠীর বক্তব্য ‘কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রমে বিনোদ আদানির কোনো ভূমিকা নেই’।
নথিতে দেখা যায় যে, অফশোর কোম্পানি থেকে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে বিনিয়োগ করা হয়েছে, সেগুলো থেকে এককভাবে লাভবান হয়েছেন বিনোদ আদানির ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগী। এছাড়া বিভিন্ন আর্থিক রেকর্ড ও সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, মরিশাসভিত্তিক তহবিল থেকে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কেনায় যে বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা আবার দেখভাল করেছে দুবাইভিত্তিক এক কোম্পানি, যার পরিচালনায় আছেন বিনোদ আদানির একজন পরিচিত কর্মী।