Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 3:59 am

আদালতে মানুষের দুর্দশার সুযোগ নেয়া বরদাশত করা হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক: আদালত প্রাঙ্গণে মানুষের দুর্দশার সুযোগ নেয়া কখনোই বরদাশত করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। গতকাল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ১২তলা ভবন ‘বিজয় ৭১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি জানেন, বার (আইনজীবী সমিতি) এবং বেঞ্চ (আদালত) জুডিশিয়ারি নামক একটি পাখার দুটি ডানা। একটি শক্তিশালী বার শক্তিশালী জুডিশিয়ারির জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বর্তমান সংখ্যা ৯ হাজার ৩০২ জন। তাদের বসার জায়গার সংকুলান বর্তমান বার বিল্ডিংগুলোয় একদমই অসম্ভব। তাদের বসার এবং সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার। এজন্যও বারের নতুন ভবন তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের সার্বিক মঙ্গলের জন্য আপনার গৃহীত পদক্ষেপ ও সুদৃঢ় অঙ্গীকার নিঃসন্দেহে আগামী প্রজšে§র পথচলায় পাথেয় হয়ে থাকবে।’

দেশের মুক্তি সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘অত্যাচারী শাসকশ্রেণির নিপীড়নে জর্জরিত জনতার সাম্য, গণতন্ত্র তথা ন্যায়বিচারের স্পৃহায় জেগে ওঠা উত্তাল আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জš§ হয়েছিল আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের। মহান সংবিধানের চেতনা সমুন্নত রাখার সুদৃঢ় প্রত্যয়ে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার মানসে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ। আজ বলতে গর্ব হয়, যে সকল বিচারপতি, আইনজীবী ও গুণীজনের নিষ্ঠা, প্রয়াস ও পদস্পর্শে ঋদ্ধ হয়েছে এই আদালত প্রাঙ্গণ, তাদের অনেকে আইন অঙ্গনেই শুধু নয়, পুরো বাংলাদেশের ইতিহাসজুড়ে তাৎপর্যময় অবদানের মাধ্যমে সমুজ্জ্বল হয়ে আছেন। তাদের গড়ে যাওয়া দৃষ্টান্তের ওপর ভর করে আজ প্রাণ পেয়েছে সুবিচারের এই সৌধ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্মানিত বিচারকরা নিয়েছেন সততা, সাহসিকতা ও সমবেদনার দীক্ষা। সেই সঙ্গে সমর্থ হয়েছেন অগণন আলোচিত জনগুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদানে। বিচারকরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন তাদের সততা, মেধা ও শ্রম দিয়ে মামলার জট ছাড়িয়ে দুর্দশাগ্রস্ত বিচারপ্রার্থীদের আদালত প্রাঙ্গণ হতে যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফেরাতে।’

বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে আচরণের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি প্রত্যেক বিচারক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছি সবার সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে। আদালত প্রাঙ্গণে মানুষের দুর্দশার সুযোগ নেয়া কখনোই বরদাশত করা হবে না।’

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।