আনোয়ারায় অধরা টিসিবি পণ্য

এনামুল হক নাবিদ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): নিত্যপণ্যের বাজারে জ্বলছে আগুন। সবজি থেকে মুদিপণ্য- সব পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। বাজারের এ ঊর্ধ্বগতিতে মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের যেন নাভিশ্বাস চরমে। দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তার রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য সাধারণ মানুষের বিশেষ সহায়। তবে সংকটকালে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কোথাও দেখা যাচ্ছে না টিসিবি পণ্য। অধরা রয়ে গেছে। ফলে কম দামে পণ্য কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ। ভোক্তার সুবিধার্থে টিসিবি নির্ধারিত কিছু পণ্য কম দামে বিক্রির উদ্যোগ নিলেও উপজেলার কোথাও মিলছে না এসব পণ্য।

এদিকে গতকাল উপজেলার বৃহৎ কাঁচাবাজার চাতরি চৌমুহনী বাজার ঘুরে দেখা যায়, সয়াবিন তেল ৭২৮ (৫ লিটার), ডিম ১১০ থেকে ১১৫ (ডজন), ব্রয়লার সোনালি ৩০০, গরুর মাংস ৬০০, কাচকি ৪৫০ থেকে ৫০০, রুই ২৮০ থেকে ৩২০ (মাঝারি আকার), পেঁয়াজ ৬৮ থেকে ৭০, টমেটো ১৫০, পেঁপে ৩০, ঢেঁড়শ ৬০ থেকে ৭০, শিম ১৩০, পটোল ৬০, বেগুন (সবুজ) ৭০, চিচিঙ্গা ৬০, ঝিঙা ৬৫ থেকে ৭০ ও কাঁচামরিচ কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্য ও নি¤œমধ্যবিত্ত মানুষের সুবিধার্থে চারটি পণ্য তুলনামূলক কম দামে ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, চিনি ও ডাল। পণ্যগুলো নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে বিক্রি করার কথা। কিন্তু বৈধ ডিলার না থাকায় এ টিসিবির পণ্য আনোয়ারায় বিক্রি করা হচ্ছে না।

সূত্র আরও জানিয়েছে, আনোয়ারায় দুটি অনুমোদিত ডিলার ছিল। তার মধ্যে একটি হচ্ছে স্বচ্ছ ট্রেডার্স, অন্যটি হক অ্যান্ড ব্রাদার্স। অসাধু পন্থা অবলম্বন করায় তাদের ডিলারশিপ বাতিল হয়েছে। তার মধ্যে হক অ্যান্ড ব্রাদার্স আগেই বাতিল হয়েছে। ইতোমধ্যে খোলাবাজার পণ্য বিক্রি করার দায়ে র‌্যাবের হাতে আটক হয় স্বচ্ছ ট্রেডার্সের মালিক। ফলে এর ডিলারশিপ বাতিল করতে ইউএনও বরাবর চিঠি দিয়েছে টিসিবি জেলা কার্যালয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, উপজেলায় টিসিবির দুজন ডিলার ছিলেন। বিভিন্ন সময় পণ্য বিক্রির করার ক্ষেত্রে অসাধু উপায় অবলম্বন করায় দুজনের ডিলারশিপ বাতিল হয়েছে। ডিলারশিপ না থাকায় আপাতত আনোয়ারায় কোথাও টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে না।

টিসিবি পণ্য না পাওয়ায় রমজান আলী নামে এক ভোক্তা বলেন, সব পণ্যের দাম বাড়ছে। এমন সময় টিসিবির পণ্য ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করলে কিনে নিতাম। মানুষ কম দামে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতেন। সংকটের এ সময় উপজেলার কোথাও টিসিবি পণ্য বিক্রি হতে দেখিনি। কিন্তু কম দামে এসব পণ্য পেলে মানুষের অনেক উপকার হতো। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত নি¤œআয়ের মানুষেরা বেশি উপকৃত হতেন।

টিসিবি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার উপ-ঊর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী প্রধান জামাল উদ্দীন বলেন, আনোয়ারায় দুটি ডিলারের মধ্যে একটির ডিলারশিপ আগে বাতিল হয়েছে। বর্তমান যেটি আছে সেটিও বাতিল হবে। ফলে আনোয়ারায় টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে না। আমরা নতুন ডিলার বা অন্য কোনো উপায়ে হলেও আগামী সপ্তাহের দিকে আনোয়ারায় টিসিবির পণ্য বিক্রির চেষ্টা করছি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০