আনোয়ারায় ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ

এনামুল হক নাবিদ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপশুর এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়েছে। খামার ও গৃহস্থের বাড়িতে পালিত গবাদিপশু এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় খামারি ও গৃহস্থরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭টা গরু উপজেলা হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটিরিনারি হাসপাতালের এসএলও রতন কান্তি মহাজন। খামারিরা বলছেন, মহামারি আকারে ছড়াচ্ছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএনডি)। ফলে গবাদিপশু দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কম বয়সি গরু বাছুর মারা যাচ্ছে খেতে না পেরে। ফলে আর্থিক লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

জানা যায়, ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ নামের ভাইরাজ এ রোগটি দেশে বিগত দুই তিন বছর থেকে দেখা যাচ্ছে। এ রোগের এখনও কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় প্রান্তিক খামারিরা আক্রান্ত গরু নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এদিকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, এটি কম বেশি সারা বছর ছিল। কিন্তু গত এক মাসে এই রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে। এই রোগের ভ্যাকসিন থাকলেও খামারিরা পশুকে ভ্যাকসিন দিতে তেমন একটা আগ্রহী হয় না। ফলে একটা সময় উপজেলাজুড়েই প্রকোপ বিস্তার করে থাকে ভাইরাস সংক্রমিত এই রোগটি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসে প্রায় এক থেকে দুইশ গরু হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়া এ পর্যন্ত আনোয়ারায় ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজে আনুমানিক দুইশর অধিক গরু আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ পশু সুস্থ হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ক্ষদ্র খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরুর গায়ে প্রথমে গুটি গুটি দেখা যায় নতুবা কোনো এক জায়গায় ফোলে যায় তার পর শরীর থেকে পানি বের হয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এরপর দু-এক দিনের মধ্যেই গরুর শরীরজুড়েই গুটির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষত থেকে রক্ত বের হয়। এ সময় গরুর শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা দেখা দেয় এবং গরু আহার ছেড়ে দেয়। অনেক সময় গরুর বুকের নিচে পানি জমে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এছাড়া ক্ষতস্থান থেকে মাংস খসে খসে পড়ে। সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা কিংবা রোগের লক্ষণ জানা না থাকায় বেশ কিছু গরুর অবস্থা অবনতি হয়ে মৃত্যু হয়। উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভিলপুর গ্রামের হারুন নামের এক খামারির ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত একটি গরু মারা যায়। এছাড়া উপজেলার বটতলী, বরুম ছড়াসহ কয়েক জায়গায় বেশ কয়েকটি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান খামারিরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমরঞ্জন বড়–য়া বলেন, এ সময়ে সারাদেশে কম বেশি এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশু। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা দিচ্ছি এ নিয়ে খামারিদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।  কারণ এটি একটি ভাইরাস জাতীয় রোগ। রোগটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও সময়মত চিকিৎসা নিলে এর প্রভাব তেমন একটা ক্ষতিকর না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০