আনোয়ারায় মন্দির উন্নয়নের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

এনামুল হক নাবিদ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সদর ইউনিয়নের বোয়ালগাঁও শ্রী শ্রী ব্রহ্মমঠ ও মিশনের দ্বিতীয় তলার উন্নয়নের কাজ শেষ না করে সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে মন্দির কমিটির সভাপতি ও উন্নয়ন কাজের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মন্দিরের সংস্কার, মেরামত ও উন্নয়নের জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়।

ব্রহ্মমঠ মন্দিরের জন্য ছয় লাখ ৮৫ হাজার ৩৯২ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দ টাকার মধ্যে চার কিস্তিতে প্রায় ছয় লাখ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়া অন্যান্য খাত থেকে এ মন্দিরের উন্নয়নের জন্য অনুদানসহ মোট আট লাখ ১৪ হাজার ২০৫ টাকা ব্রহ্মমঠের ফান্ডে জমা হয়। ব্রহ্মমঠের উন্নয়নে ৮৫ শতাংশ টাকা খরচ হলেও কাজের অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ।

সরেজমিন দেখা গেছে, মন্দিরের উন্নয়ন কাজের জন্য হিন্দু ধর্মীয় কল্যণ ট্রাস্টের কাছে চাহিদাপত্রে মন্দিরের বেজ, কলাম, ছাদ ঢালাই, দেওয়াল, আস্তর, টাইলস ও গেটে জানালা লাগানোর জন্য ছয় লাখ ৮৫ হাজার ৩৯২ টাকার আবেদন করা হয়। চাহিদাপত্র অনুযায়ী ব্রহ্মমঠ সংস্কারকাজ চলমান দেখিয়ে চার কিস্তিতে ছয় লাখ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুশীল ধর, উন্নয়ন কাজের সাধারণ সম্পাদক জোটন মিত্র ও ব্রহ্মমঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তাপসানন্দ গিরি মহারাজ।

প্রল্পের মেয়াদ ২০১৭-২০ পর্যন্ত চার বছর পেরিয়ে গেলেও দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের জন্য সেন্টারিংয়ের লোহার রড বাধা ছাড়া আর কোনো কাজ করেনি।

এ বিষয়ে মন্দিরের শ্রীমৎ স্বামী তাপসানন্দ গিরি মহারাজ জানিয়েছেন, ব্রহ্মমঠের টাকাগুলো সুশীল ধর আর জোটন মিত্র কয়েক ধাপে উত্তোলন করেন। কিন্তু সম্পূর্ণ টাকা ছিল জোটন মিত্রের হাতে। কাজ শুরু করার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করতে পারেনি। অথচ তার হিসাব আর খরচ কোনোটার মিল নেই। আট লাখ ১৪ হাজার টাকার মধ্যে সাত লাখ ৫৩ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে কমিটির সভাপতি সুশীল ধর ব্রহ্মমঠের উন্নয়নের বরাদ্দ টাকা উত্তোলনের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমি ব্রহ্মমঠের কেউ না। আপনারা ব্রক্ষচারী, যীশু মিত্র আর জোটন মিত্রের কাছে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রহ্মমঠ উন্নয়ন কাজের সাধারণ সম্পাদক জোটন মিত্র বলেন, কাজ শুরু হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে ছাদ ঢালাই হয়ে যাবে। টাকার হিসাবে গড় মিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অসীম কুমার দেব বলেন, ব্রহ্মমঠের অর্থ আত্মসাতের কোনো অভিযোগ আসেনি। কিন্তু বিষয়টি শুনেছি। তবে মন্দিরের কাজের জন্য সিট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া না দিয়ে সিট রেখে দেয়ার অভিযোগ পেয়েছি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছি। খরচ অনুযায়ী কাজ শেষ হয়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০