নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) সমন্বয় কমিটি। গতকাল সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিসিএস সমন্বয় কমিটির সভায় এ অভিযোগ করা হয়। সমন্বয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কবীর আহমেদ ভূঁইয়া সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বক্তারা বলেন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের পরিবর্তে দিন দিন বাড়ছে। উপসচিব ও তার ওপরের পদে অব্যাহত সুপার নিউমারারি পদোন্নতির ব্যবস্থা চালু করে তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি কেনায় সুদমুক্ত ঋণ প্রদান ও গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে আর্থিক সহায়তা দিয়ে বৈষম্য আরও বাড়ানো হয়েছে।
তারা বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে ২৬ ক্যাডার ও ফাংশনাল সার্ভিসের কর্মকতারা অবদান রাখলেও বিশেষ কোনো সুবিধা পান না। অথচ উপসচিব পর্যায়ের পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তারা গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ ও গাড়ি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা পাচ্ছেন; যা অত্যন্ত দুঃখজন। এটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতীয় সংসদে অনুমোদিত সার্ভিস (রিঅর্গানাইজেশন অ্যান্ড কন্ডিশন) অ্যাক্ট ১৯৭৫-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সভায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের অংশ হিসেবে পঞ্চম গ্রেড ও তার ওপররের পর্যায়ের সব ক্যাডার ও সার্ভিসের কর্মকর্তাদের গাড়ি ক্রয়ের জন্য সুদমুক্ত ঋণসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালে বেতনস্কেল নিয়ে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সে সময়ের মুখ্যসচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থসচিব ও শিক্ষা সচিব প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে সব ক্যাডারের পদসোপান সুষমকরণের মাধ্যমে পদোন্নতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সে বিষয়টিও আমলাতান্ত্রিক নিয়মের বেড়াজালে আটকে দেওয়া হয়। গত ২ জুলাই ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রী আবার নির্দেশনা দিলেও সে বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
অবিলম্বে সব ক্যাডার ও সার্ভিসের পদোন্নতির সোপান সুষমকরণের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়। বিসিএস সমন্বয় কমিটির মহাসচিব মো. ফিরোজ খান, সহসভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ এ তালেব, সহসভাপতি এম তাসাদ্দেক আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুমে রব্বানী খান, প্রচার সম্পাদক স ম গোলাম কিবরিয়া, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের মহাসচিব মো. খায়রুল আলম প্রিন্স, শিক্ষা ক্যাডারের মহাসচিব মো. শাহেদুল কবীর, স্বাস্থ্য ক্যাডারের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আ ম সেলিম রেজা, ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফায়জুল হক, ফিশারিজ ক্যাডারের মহাসচিব বিএম মোস্তফা কামাল, প্রাণিসম্পদ ক্যাডারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম, বিসিএস কৃষি ক্যাডারের মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন, পরিসংখ্যান ক্যাডারের মহাসচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, টেলিকম ক্যাডারের যুগ্ম সম্পাদক জগদীশ চন্দ্র সরকার উপস্থিত ছিলেন।
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষিত
