নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে আন্তঃব্যাংক ডলারের দাম বেড়ে ১০৯ টাকা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিনিময় হার এটাই সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২৩ মে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা ৭৫ পয়সায় লেনদেন হয়।
ব্যাংকাররা জানান, ফরমাল মার্কেটের তুলনায় ইনফরমাল মার্কেটে ডলারের দর বেশি। ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স হাউসগুলো থেকে ডলার কিনে থাকে। তাই ইনফরমাল মার্কেটে ডলারের দর বেশি থাকলে ব্যাংকগুলোকেও বেশি দরে ডলার কিনতে হয়। এ জন্য আন্তঃব্যাংক ডলারের দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার সর্বোচ্চ ১০৯ টাকার মধ্যে ডলার লেনদেন করছে ব্যাংকগুলো। ডলারের সর্বনি¤œ দর ছিল ১০৮ টাকা শূন্য দশমিক ৩ পয়সা। এর আগে গত ২৩ মে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা ৭৫ পয়সায় লেনদেন হয়। তারও আগে গত ১৫ মে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিনিময় দর ১০৮ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠেছিল। আর ৭ মে তা ছিল ১০৮ টাকা।
তবে বর্তমানে রেমিট্যান্স ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে থাকে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) নেতারা। গত ৩১ মে রেমিট্যান্সে ডলারের দাম বাড়িয়ে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয় আর রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ১০৭ টাকা; যা আগে রেমিট্যান্সে ছিল ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি আয়ে ছিল ১০৬ টাকা।
আমদানি ব্যয় পরিশোধ এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহের ধীরগতির কারণে এক বছর ধরে টাকার মান ক্রমশ কমছে। গত এক বছরে টাকার মান কমেছে ১৮ শতাংশ।
চলতি বছরের মে মাসে দেশে ১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পণ্য, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৮৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি বেড়েছে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ। মে মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫১২ কোটি ডলার। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় হয়েছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ কম।
আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরও ডলার সংকট কাটছে না। ফলে নিয়মিত বাজারে ডলার সরবরাহ করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৬ কোটি ৯০ লাখ ডরার বিক্রি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ১৩ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারে।