নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তঃব্যাংক ডলারের সর্বোচ্চ বিনিময় হার ও রপ্তানিতে ডলারের নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে আন্তঃব্যাংকে ডলার বেচা-কেনা হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকায়। আর রপ্তানি আয়ে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা দাম পাবে রপ্তানিকারকরা। আর আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের একক অঙ্কের বিনিময় হার শুরু হবে।
গতকাল সোমবার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ডলারের নতুন দামের এ সিদ্ধান্ত পরবর্তী কর্মদিবস থেকে কার্যকর হবে।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা বেসরকারি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, এবিবি ও বাফেদা যৌথ সভায় রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। জুলাই থেকে রপ্তানির বিপরীতে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা দেবে ব্যাংকগুলো। রপ্তানি আয়ের ডলার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত আছে রেমিট্যান্সের দাম। কারণ আমরা রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের রেট এক করার জন্য কাজ করছি। এজন্য রেমিট্যান্সের সঙ্গে সমন্বয় করতে রপ্তানি আয়ের রেট বাড়ানো হয়েছে।
এতদিন রপ্তানিতে যা ছিল ১০৭ টাকা। ব্যাংকিং বা বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী শ্রমিকরা রেমিট্যান্স পাঠালে প্রতি ডলারে পাবেন ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১০৮ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ১০৮ টাকা ৯০ পয়সা। এটা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ বিনিময় হার। এর আগে গত মাসে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম ১০৮ টাকা ৭৫ পয়সায় উঠেছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক, কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর। এর পর থেকে এ দুই সংগঠন মিলে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত কার্যকর করছে এ দুই সংগঠন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে যে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে, তার অন্যতম শর্ত হলো সব ক্ষেত্রে ডলারের এক দাম নির্ধারণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মানুষেরা বলছেন, এর অংশ হিসেবে ডলারের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বাজারে যে দামে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে, তার চেয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক দর কম। এ কারণে সামনে ডলারের দর আরও বাড়াতে হবে।