শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীন জানিয়েছে, তারা প্রশান্ত মহাসাগরে নকল বোমাবাহী একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। খবর: বিবিসি ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৪ মিনিটে আইসিবিএমটি ছোড়া হয় এবং সেটি ‘মহাসাগরের প্রত্যাশিত এলাকায় গিয়ে পড়েছে’।
এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণটি ‘নিয়মিত কার্যক্রমের’ এবং ‘বার্ষিক প্রশিক্ষণের’ অংশ বলে জানিয়েছে তারা।
বিবিসি জানিয়েছে, কী ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে আর সেটি কোন পথ ধরে গেছে, এ বিষয়গুলো পরিষ্কার না হলেও চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেইজিং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ‘আগেভাগেই বিষয়টি জানিয়েছে’। পরে জাপান জানায়, তারা এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের বিষয়ে ‘কোনো নোটিশ’ পায়নি।
সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসির ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ড্রিউ থম্পসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, চীনের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি কোনো দেশকে লক্ষ্য করে উৎক্ষেপণ করা হয়নি। কিন্তু চীনের সঙ্গে জাপান ও ফিলিপাইনের ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাইওয়ানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা তো আছেই। এদের সবাইকে ভয় দেখানোর জন্য চীন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে থাকতে পারে বলেও দাবি করেন তিনি।
চীন নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা সাধারণত দেশের অভ্যন্তরে করে থাকে। এর আগে তারা তাদের আইসিবিএমর পরীক্ষামূলক উৎপক্ষেপণগুলো শিনজিয়াং অঞ্চলের তাকলামাকান মরুভূমিতে করেছিল।
১৯৮০ সালের পর থেকে এই প্রথম দেশটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরীক্ষামূলকভাবে আইসিবিএম ছুড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ১৯৮০ সালের মে মাসে চীন শেষবার প্রশান্ত মহাসাগরে আইসবিএমের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছিল। তখন সেটি ৯ হাজার ৭০ কিলোমিটার উড়ে গিয়ে পড়েছিল। ওই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের সময় চীনের নৌবাহিনীর ১৮টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত ছিল। এটিকে চীনের অন্যতম সবচেয়ে বড় নৌ মিশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গত বছর এক প্রতিবেদনে পেন্টাগন জানিয়েছিল, তাদের হিসাবে চীনের অস্ত্রভাণ্ডারে ক্ষেপণাস্ত্র যোগে বহনযোগ্য ৫০০ কার্যকর পারমাণবিক বোমা রয়েছে আর এগুলোর মধ্যে প্রায় ৩৫০টি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের কাছে এক হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র যোগে বহনযোগ্য পারমাণবিক বোমা থাকতে পারে বলে ওই প্রতিবেদনে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া-উভয়ের এ ধরনের মারণাস্ত্রের সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশি।