আপনি একা নন

কোনো কারণে নিজের চুল ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে? কিছুই ভালো লাগছে না? অবসাদে ছেয়ে আছে মন? যদি এমন মনে হয় প্রায়ই, তবে জেনে রাখুন আপনি একা নন, এমন বিপর্যস্ত সময় পার করেন অনেকে। কাজেই দুশ্চিন্তা যেন আচ্ছন্ন করে না রাখে আপনাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সুইডেনের স্টকহোম ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ বছরের নিচের ৮০ শতাংশ এবং ৬৫ বছরের উপরের ৪০ শতাংশ মানুষ নিঃসঙ্গতায় ভোগেন। গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে বন্ধুর সংখ্যা বাড়াতে হবে। তবে মোটেও সহজ নয় বন্ধু গড়ে তোলা। হতাশ হওয়ার কিছু নেই, বন্ধুত্বের আকাক্সক্ষাও এক ধরনের টনিক হিসেবে কাজ করে এ সময়ে। এর উপকারিতা অনেক। গবেষণায় দেখা গেছে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটালে, এমনকি তাদেরকে নিয়ে চিন্তা করলে মন ও শরীর উভয়ে ভালো থাকে।
দিল্লির জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক রিসার্চের (জেসিডিআর) মতে, একাকীত্বের সঙ্গে মানসিক বৈকল্য ও শারীরিক স্বাস্থ্যের পারস্পারিক সম্পর্ক রয়েছে। ফলে নিদ্রাহীনতা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, বুড়িয়ে যাওয়া, অ্যালঝেইমার প্রভৃতি রোগ দেহে বাসা বাঁধতে পারে।
বোঝা যায়, সামগ্রিক সুস্থতার জন্য একলা থাকা ঠিক নয়। তাই পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গ উপভোগ করা উচিত। এতে বিষন্নতা কমে যাবে। জ্ঞানের স্তর বাড়বে জানার আকাক্সক্ষা একজন মানুষকে চনমনে রাখে।
উন্নত দেশগুলোয় বয়স্ক মানুষদের জন্য প্লেটোনিক সম্পর্কের যোগসূত্র ঘটাতে বিভিন্ন ওয়েসাইট রয়েছে। যেমন মিটআপ ডট কম কিংবা ইভেন্টব্রাইট ডট কম, ওয়াও ক্লাব-ওমেন, ওয়ান্ডারলাস্ট-ফর লেডিস প্রভৃতি। মনস্তত্ত্ববিদরা নিঃসঙ্গতায় ভুগছে এমন বয়স্ক মানুষদের এমন ওয়েবসাইটের সদস্য হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আমাদের দেশে এমনটি সম্ভব না হলেও বিভিন্ন ক্লাব রয়েছে যেখানে আপনি সদস্য হতে পারেন। বই পড়ার ক্লাবে যোগ দিতে পারেন। রান্নার ক্লাস করতে পারেন। সাইক্লিস্ট গ্রুপের সদস্য হলে কেমন হয়? আপনার সুবিধাজনক স্থানে আপনার জন্য খাপ খায় এমন গ্রুপ বেছে নেওয়া উত্তম। এমন কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত হন যেখানে সময় ব্যয় করার সুযোগ রয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টাই নয়, সপ্তাহের পর সপ্তাহ যেন কাটানো যায় মানুষের সঙ্গে সেই ভাবনা থেকে সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
মাঝেমধ্যে বাড়িতে পার্টি দিতে পারেন। ফলে আপনার পারিপার্শ্বিক ক্ষেত্র আরও বৃহৎ হবে। নিজেকে মেলে ধরুন সেই অনুষ্ঠানে।
আপনার পরিচিত ব্যক্তি যদি সাইক্লিং পছন্দ করেন, তবে তাকে নিয়ে সাইকেলে চড়ে ঘুরে আসুন পছন্দের কোনো জায়গা থেকে।
বন্ধু হোন। একসঙ্গে ঘোরাফিরা করলেই যে বন্ধুত্ব হবে, তা নয়। এ জন্য একে-অন্যের
জন্য সময় দিতে হবে। মনোযোগ দিতে তার পছন্দ-অপছন্দকে। শুনতে হবে তার কথা।

রিডার্স ডাইজেস্ট অবলম্বনে রতন কুমার দাস

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০