নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর গুলশান এলাকায় সুবাস্তু টাওয়ারে সিলগালা করে দেওয়া আপন জুয়েলার্সের শোরুমে ফের অভিযান চালিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দারা। গতকাল সোমবার বিকালে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের যুগ্ম কমিশনার শাফিউর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
শাফিউর রহমান জানান, রোববার গুলশান এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় তাদের সদস্যরা সুবাস্তু টাওয়ারের ওই দোকান সিলগালা করে গিয়েছিলেন। আজ (গতকাল) সোমবার সেটি খুলে অভিযান চালানো হয়েছে। মৌচাক, উত্তরা, জিগাতলার সীমান্ত স্কয়ার ও গুলশানে ডিসিসি মার্কেটের শোরুম থেকে প্রায় ৩০০ কেজি স্বর্ণালঙ্কার এবং ৬১ গ্রাম হীরা জব্দ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
এদিকে স্বর্ণ ও হীরা জব্দের বিষয়ে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের গোয়েন্দা দফতরে তলব করেছে শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগ। আগামীকাল ১৭ মে বেলা ১১টায় তাদের কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের সদর দফতরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান, স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহের তথ্যে অস্বচ্ছতা এবং মালিকের ‘অবৈধ সম্পদের’ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবেই শুল্ক আইনের বিধান অনুসারে ওই অলঙ্কার তারা জব্দ করেছেন। ‘ব্যাখ্যাহীনভাবে’ সোনা ও হীরার গয়না মজুতের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।
বনানীতে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদ আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক। এ পরিবারের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালানের অভিযোগ থাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে একটি অনুসন্ধান কমিটি করে তদন্ত চালাচ্ছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। এর অংশ হিসেবে রোববার ঢাকায় আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুমে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দারা। এদিকে আপন জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণ জব্দের বিষয়ে জুয়েলারী অ্যাসোসিয়েশন উদ্বেগ জানিয়েছে। গতকাল কাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানায়।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণী। ওই ঘটনায় গত ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা। এরপর সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে বৃহস্পতিবার সিলেট থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে। আর সাদমান পিকাসো রেস্তোরাঁর অন্যতম মালিক ও রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন নাঈম আশরাফ (৩০), সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল (২৬) ও অজ্ঞাতনামা দেহরক্ষী। গ্রেফতার সাফাত ও সাদমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করছে পুলিশ।
Add Comment