Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 9:51 am

আপাতত বাড়ছে না মোবাইলে কলরেট

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল ফোনের কলরেট পুনর্নির্ধারণে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। গতকাল ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ প্রস্তাব ফেরত পাঠান।

তারানা হালিম বলেন, ‘আমার কাছে প্রস্তাবটি এসেছিল। তবে পুনরায় বিশ্লেষণ করতে সেটি আবার বিটিআরসিতে পাঠিয়েছি। কারণ বর্তমান সরকারের মূল নীতি হচ্ছে, গ্রাহকপর্যায়ে যেন কোনোভাবেই খরচ বৃদ্ধি না হয়।’

বর্তমানে একই অপারেটরে ফোনকলের জন্য (অন-নেট) গ্রাহকদের প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা এবং অন্য অপারেটরে (অফ-নেট) ৬০ পয়সা খরচ হয়। আর প্রতি মিনিটের সর্বোচ্চ কলরেট এখন দুই টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।

সম্প্রতি কমিশন সভায় কলরেট পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে টেলিযোগাযোগ বিভাগে প্রস্তাব পাঠায় বিটিআরসি। সেখানে অন-নেটে সর্বনিম্ন কলরেট বাড়িয়ে ৩৫ পয়সা, অফ-নেটে সর্বনিম্ন কলরেট কমিয়ে ৪৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ সীমা দুই টাকা থেকে কমিয়ে দেড় টাকা করার কথা বলা হয়।

বিটিআরসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে ওই কলরেট চালু করা হবে। পরে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) পরামর্শকের মতামত নিয়ে কলরেটের বিভিন্ন স্তর চূড়ান্ত করা হবে।

তারানা হালিম বলেন, এ প্রস্তাবে কোনো জায়গায় খরচ বাড়বে আবার কোনো জায়গায় খরচ কমবে, ওভারঅল ইমপ্যাক্টটা কী হবেÑতার একটা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। গ্রাহক যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা মাথায় রেখেই বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে। ফাইলটি সেভাবেই ফেরত গেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপারেটরদের লাভ-ক্ষতি বা রাজস্ব আয়ের চেয়ে এখানে প্রধান বিবেচ্য বিষয়, গ্রাহককে যেন বাড়তি টাকা গুনতে না হয়। এর আগে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) পরামর্শকের সুপারিশে ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন কলরেট নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার।

প্রায় সাত বছর পর বিটিআরসি তা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছিল এই যুক্তিতে, নতুন কাঠামো চালু হলে পিছিয়ে থাকা অপারেটরগুলো সুবিধা পাবে এবং বাজার ভারসাম্য তৈরি হবে। তাছাড়া সামগ্রিকভাবে এ খাতে আয় বাড়বে।

বিটিআরসির ফেব্রুয়ারির হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রায় ১৩ কোটি মোবাইল ফোন গ্রাহকের মধ্যে পাঁচ কোটি ৯৩ লাখই গ্রামীণফোন ব্যবহার করেন, যা দেশের মোট গ্রাহকের ৪৫ শতাংশ।

একীভূত হওয়ার পর রবি-এয়ারটেল মিলে তিন কোটি ৫০ লাখ এবং বাংলালিংক তিন কোটি ১৩ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। আর সিটিসেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের হাতে রয়েছে সবচেয়ে কম, ৩৭ লাখ গ্রাহক।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টিআই এম নুরুল কবীর বলেন, ‘মোবাইল ফোনে কলরেট পুনর্নির্ধারণে অতীতে অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বিটিআরসি যদি কলরেট পুনর্নির্ধারণ করতে চায়, তাহলে অপারেটরদের সঙ্গে পরামর্শ করেই তা করা উচিত।’