Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 1:24 am

আপেলের পুষ্টিগুণ

আপেল একটি সুস্বাদু ও পরিচিত ফল। এটি রোসাসি গোত্রের ম্যালিয়াস ডমেস্টিকা প্রজাতিভুক্ত। রোগ প্রতিরোধক ও পুষ্টিকর ফল এটি, যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি মূলত মিষ্টি স্বাদের জন্য সবার কাছে জনপ্রিয়। এতে রয়েছে শর্করা, ভিটামিন, খনিজ লবণ, আঁশ, পেকটিন, ম্যালিক এসিড প্রভৃতি।

পুষ্টিগুণ
একটি আপেলে রয়েছে খাদ্যশক্তি ৫২ কিলোক্যালরি, শর্করা ১৩.৮১ গ্রাম, চিনি ১০.৩৯ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ২.৪ গ্রাম, চর্বি ০.১৭ গ্রাম, আমিষ ০.২৬ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৫.৫৬ গ্রাম, ভিটামিন এ ৩ আইইউ, বিটা ক্যারোটিন ২৭ আইইউ, লুটেইন ২৯ আইইউ, থায়ামিন ০.০১৭ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন ০.০২৬ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.০৯১ মিলিগ্রাম, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড ০.০৬১ মিলিগ্রাম, ফোলেট ৩ আইইউ, ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ই ০.১৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ২.২ আইইউ, ক্যালসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.১২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫ মিলিগ্রাম, ম্যাংগানিজ ০.০৩৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১১ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১০৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম, জিংক ০.০৪ মিলিগ্রাম, ফ্লোরাইড ৩.৩ আইইউ।

উপকারিতা

আমরা যা কিছু খাই, তার মধ্যে কিছু না কিছু ক্ষতিকারক পদার্থ থাকে, ফলে আমাদের লিভারের ক্ষতি হতে শুরু করে। আপেল খুব সহজে লিভারে জমে থাকা ক্ষতিকারক উপাদান বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে

আপেলে যে ফাইবার রয়েছে তা অন্ত্রের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে, ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক থাকে। হার্টের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি কমায়

এটি হজমশক্তি বাড়ায়। ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে

আপেলের মধ্যে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা কুয়েরসেটিন নামে পরিচিত। এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে

ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট ইন দ্য ইউএসের গবেষণা থেকে জানা যায়, আপেলে যে পরিমাণ ফাইবার থাকে, তা মলাশয়ের ক্যানসার রোধে সাহায্য করে। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যানসার রিসার্চের মাধ্যমে জানা যায়, আপেল খেলে অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কম হয়, কারণ আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনল থাকে

যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা আপেলের মধ্যে এমন কিছু উপাদানের সন্ধান পেয়েছেন, যা ট্রিটারপেনয়েডস নামে পরিচিত। এই উপাদানটি লিভার, স্তন ও কোলোনের মধ্যে ক্যানসারের কোষ বেড়ে উঠতে বাধা দেয়

আপেলের রস দাঁতের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। ফলে দাঁত ভালো থাকে

ত্বক মসৃণ রাখতে এর গুণাবলি শেষ করা যায় না। প্রতিদিন আপেল খেলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়

আপেলে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে, ফলে তৃষ্ণা ও পানিশূন্যতা দূর হয়। এটি দেহকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। পানিশূন্যতা পূরণ করতে অ্যাপেলের জুড়ি নেই

খাদ্যচাহিদার সঙ্গে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে, ফলে মেদ জমে না

এতে পেকটিন নামে একটি উপাদান রয়েছে। পেকটিন ইনসুলিনের পরিমাণ ঠিক রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।

আপেল ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে, তাহলে হজম শেষে এর সব উপাদান নিতে পারবে শরীর। ভালোভাবে না চিবিয়ে খেলে পাকস্থলীকে প্রচুর বেগ পেতে হয়। এতে পেটব্যথা হতে পারে। খালি পেটে আপেল খাওয়া উচিত নয়। আপেলে থাকা অ্যাসিডের কারণে বদহজম হতে পারে। খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে

ইন্টারনেট অবলম্বনে শিপন আহমেদ