আফগানিস্তানকে উড়িয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক: আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে একমাত্র টেস্টে ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেল বাংলাদেশ। যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের ইতিহাসে নয় একবিংশ শতাব্দীতে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়, সামগ্রিকভাবে তৃতীয় বৃহত্তম।

এছাড়া সব মিলিয়ে প্রায় দেড়শ বছর ও আড়াই হাজার টেস্টের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় ব্যবধানে জয় আছে শুধুমাত্র ২টি। ১৯২৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬৭৫ রানে জেতে ইংল্যান্ড। ছয় বছর পর ইংল্যান্ডকে ৫৬২ রানে হারায় অস্ট্রেলিয়া। অর্থাৎ টেস্ট ক্রিকেটে গত ৮৯ বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড।

শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনের খেলায় নামে দুদল। যেখানে আফগানিস্তান নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১৫ রানে গুটিয়ে যায়। তৃতীয় দিন দলটি ৪৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে মাঠ ছেড়েছিল।

চতুর্থ দিন শুরুতেই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা আফগানদের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন এবাদত হোসেন। দিনের তৃতীয় ওভারে নাসির জামালকে ব্যক্তিগত ৬ রানে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন এই পেসার।

এরপর আফগান শিবিরে জোড়া আঘাত করেন শরীফুল ইসলাম। এই বাঁহাতি পেসার প্রতিপক্ষের উইকেটরক্ষক আফসার জাজাইকে (৬) স্লিপে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ বানান। পরে সাব হিসেবে নামা বাহির শাহকে (৭) তাইজুল ইসলামের ক্যাচে ফেরান তিনি।

আফগানদের ষষ্ঠ ও সপ্তম উইকেট তুলে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। রহমত শাহকে ব্যক্তিগত ৩০ রানে ফেরানোর পর করিম জানাতকে (১৮) বোল্ড করেন এই ডানহাতি।

মিরাজের ঘূর্ণি ডেলিভারি বড় শট খেলার চেষ্টায় ব্যাটে-বলে করতে পারেননি আমির হামজা হোতাক। বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে হেলমেটে লেগে জমা পড়ে শর্ট লেগে দাঁড়ানো মুমিনুল হকের হাতে। আফগান হারায় অষ্টম উইকেট। যদিও বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লে দেখে গ্লাভসে বল লাগা নিশ্চিত হন টিভি আম্পায়ার। ফলে বদলে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।

লাঞ্চ বিরতির শেষ ওভারে ফের আঘাত হানলেন তাসকিন আহমেদ। তার ফুল লেংথ ডেলিভারি অফ ড্রাইভ করতে গিয়ে শর্ট মিড অফে ধরা পড়লেন ইয়ামিন আহমাদজাই। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নিলেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে এলোমেলো বোলিং করা তাসকিনের চতুর্থ শিকার এটি। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটিই তার সেরা বোলিং।

তাসকিনের খাটো লেংথের ডেলিভারি আঘাত করল আফগানদের শেষ ব্যাটার জাহির খানের বাহুতে। ব্যথায় কাতড়াতে কাতড়াতে উইকেট থেকে সরে গেলেন আফগান ব্যাটার। প্রাথমিক শুশ্রূষা নিয়েও আর খেলার অবস্থা ফিরে পেলেন না তিনি। আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন জাহির। আর কোনো উইকেট না থাকায় বাংলাদেশ পায় ৫৪৬ রানের জয়।

এর আগে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরিতে ৩৮২ রান করেছিল। পরে আফগানিস্তান প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট ফলো-অনে পড়ে। যদিও বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে ফলো-অন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে। সেখানে শান্তর ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হকে শতকে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪২৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৮৬ ওভারে ৩৮২

আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস : ৩৯ ওভারে ১৪৬

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৮০ ওভারে ৪২৫/৪ ডিক্লেয়ার (জয় ১৭, শান্ত ১২৪, জাকির ৭১, মুমিনুল ১২১, লিটন ৬৬, মুশফিক ৮ ; ইয়ামিন ১৩-১-৬১-০, মাসুদ ১২.৫-১-৮৩-০, হামজা ১৬.১-০-৯০-১, করিম ৮-০-৪৮-০, জাহির ২৩-০-১১২-২, শাহিদি ৩-০-১৯-০)।

আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ৩৩ ওভারে ১১৫/৯ (জাদরান ০, মালিক ৫, রহমত ৩০, শাহিদি ১৩, জামাল ৬, জাজাই ৬, বাহির ৭, জানাত ১৮, হামজা ৫, ইয়ামিন ১, নিজাত ৪*, জাহির ৪ ; শরিফুল ১০-১-২৮-৩ ,তাসকিন ৯-২-৩৭-৪,তাইজুল ৫-২-২৯-০ , মিরাজ ৭-২-২২-১)।

ফল : ৫৪৬ রানে জয়ী বাংলাদেশ।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০