নিজস্ব প্রতিবেদক: আফতাব অটোমোবাইলসের সাবেক সহকারী জেনারেল ম্যানেজার কফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সহকারী পরিচালক কোরবান আলী সেখ মামলাটি দায়ের করেছেন। সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা) ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করা হয়। দুদক জনসংযোগ দপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, কফিল উদ্দিন দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৭৫ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৮ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। তিনি এক কোটি ৪৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬১২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেন। এসব সম্পদ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, কফিল উদ্দিন ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে মোট ৩২ লাখ ২৬ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য দাখিল করা হয়। তার স্ত্রীর সম্পদ বিবরণীতে খিলগাঁওয়ে একটি ফ্ল্যাট দেখানো হয়, যার মূল্য ৪৫ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তথ্য মেলে এটির মালিক কফিল উদ্দিন। এই টাকা যোগ করে তার স্থাবর সম্পদ দাঁড়ায় ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা।
তবে নাভানা রিয়েল এস্টেট জানিয়েছে, ফ্ল্যাটটির মূল্য ৯১ লাখ ৩৯ হাজার ২৭০ টাকা। সে হিসেবে ফ্ল্যাটটির মূল্য ৪৬ লাখ ১৯ হাজার ৭৭০ টাকা ও রেজিস্ট্রি খরচ ১২ শতাংশ হিসেবে পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ৩৭২ টাকাসহ মোট ৫১ লাখ ৭৪ হাজার ১৪২ টাকা দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে কম দেখিয়ে তিনি গোপন করেছেন।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, কফিল উদ্দিনের সম্পদ বিবরণীতে রেজিস্ট্রি খরচসহ টিকাটুলিতে ৩০ লাখ ২১ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাটের তথ্য রয়েছে। কিন্তু ফ্ল্যাট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড বিল্ডার্স জানিয়েছে, এটির মূল্য ৫১ লাখ ১২ হাজার ৮০০ টাকা। সে হিসেবে তিনি ফ্ল্যাটটির মূল্য বাবদ ২০ লাখ ৯১ হাজার ৮১৬ টাকা এবং রেজিস্ট্রি খরচ ১২ শতাংশ হিসেবে দুই লাখ ৫১ হাজার ১৬ টাকাসহ মোট ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৮১৬ টাকা কম দেখিয়ে গোপন করেছেন। আয়কর রিটার্ন ও সম্পদ বিবরণীতে তার নামে এক কোটি ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৪৫৮ টাকার স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি সম্পদ বিবরণীতে ৭৫ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৮ টাকার স্থাবর সম্পদ গোপন করেছেন। এতে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, কফিল উদ্দিন নিজ নামে অর্জিত এক কোটি ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের সম্পদের মধ্যে দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের সম্পদের ঘোষণা দিয়ে ৭৫ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৮ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দাখিল করেন। এক কোটি ৪৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬১২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন।