Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 10:12 pm

আবারও ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার বাড়ছে সবজির দামও

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বাজারে অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আর সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি দুই থেকে চার টাকা। ভারতীয় চালের সংকট, মিল মালিকদের কারসাজি ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বাড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এদিকে দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে সব ধরনের সবজির দাম।

ক্রেতারা জানান, সামনে রজমান মাস। অথচ রমজানের আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর বাজারদর সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। রমজান মাসের বাজারদর কেমন হবে, তা নিয়েও চিন্তিত ক্রেতারা।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, হাতিরপুল ও শান্তিনগরসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা দরে, যা এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ছিল ৪১ থেকে ৪৩ টাকা। বিআর-২৮ মানভেদে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা, মিনিকেট (নরমাল) ৬২ টাকা এবং মিনিকেট (ভালো) ৬৪ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ টাকা এবং পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে।

কারওয়ান বাজারের চাল বিক্রেতা আজমল হোসেন জানান, আমন মৌসুম শেষ হওয়ার পর এখন ধাপে ধাপে চালের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে কারওয়ান বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেটের দাম বেড়েছে দু-এক টাকা করে। অন্য চালের দামও বেড়েছে।

তবে উত্তর বাড্ডার খান রাইস এজেন্সির চাল ব্যবসায়ী খাইরুল ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছিল। এই সপ্তাহে নতুন করে আর দাম বাড়েনি।

এদিকে বাজারে নতুন আসা পটোল, করলা, উচ্ছে ও ঢেঁড়সের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারে এসব সবজির দাম প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। হাতিরপুলে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে করলা ও পটোল।

এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি ও দেশি পেঁয়াদের দাম কেজিতে অন্তত পাঁচ টাকা কমেছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসারী সাইদুর রহমান জানান, গত শুক্রবার দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের পাল্লা অর্থাৎ (পাঁচ কেজি) ২০০ থেকে ২১০ টাকার মধ্যে ছিল। তবে এই সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের পাল্লা ১৮০ টাকায় নেমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

তবে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্যেমতে, গতকাল শুক্রবার প্রতিকেজি ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সে হিসাবে গত এক মাসে পণ্যটির দাম কমেছে ১৯ শতাংশ।

সরবরাহ ঘাটতির কারণে গত নভেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ১২০ টাকা হয়েছিল। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও বেড়ে একশ টাকার কাছাকাছি চলে যায় তখন।

পেঁয়াজের দাম কমলেও আমদানি করা রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কারওয়ান বাজারে।

কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম আগের মতোই প্রতিকেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। হাতিরপুল বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজি ১৩৫ টাকা। প্রতি ডজন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। মাছের বাজার কিছুটা চড়া বলে জানিয়েছেন কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা।

এই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ৭০০ গ্রাম ওজনের মাঝারি মানের একটি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা।  দুই সপ্তাহ আগে একই আকারের মাছ সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে এক বিক্রেতা দাবি করেন।

কারওয়ান বাজারে বাতাসি মাছ প্রতিকেজি ২৫০ টাকা, বাইম মাছ ৭০০ টাকা, টেংরা ৪০০ টাকা এবং শোল মাছ ৪০০ টাকা করে দাম চাচ্ছিলেন বিক্রেতারা।

এছাড়া মাঝারি আকারের রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। রুই-কাতলের দামে আকারভেদে বেশ পার্থক্য রয়েছে। বড় আকারের রুই মাছের কেজি যেখানে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, সেখানেই ছোট রুই মাছগুলোর দাম চাওয়া হচ্ছে আড়াইশ টাকা।