নিজস্ব প্রতিবেদক: গৃহায়ন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে এক ছাদের নিচে এনে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে প্রথমবারের মতো আগামী ১৯ অক্টোবর থেকে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শুরু হতে যাচ্ছে ‘গৃহায়ন অর্থায়ন মেলা-২০১৭’। তিন দিনব্যাপী এই মেলা চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এই মেলার উদ্বোধন করবেন।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন আয়োজিত এই মেলায় সার্বিক সহযোগিতা করবে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, মেলায় আবাসন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, রিয়েল এস্টেট ও আবাসন সামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। মেলায় ৭৬টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলা চলাকালে একইসঙ্গে মেলা ও দেশব্যাপী বিএইচবিএফসির সব অফিসে ঋণ আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদন ফি ও পরিদর্শন ফি’র ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় প্রদান করা হবে।
বিএইচবিএফসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, ‘সবাইকে এক ছাদের নিচে নিয়ে আসতেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এখানে একজন গ্রাহক তার পছন্দের ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন। একই সঙ্গে আবাসন খাতের বিভিন্ন ঋণ সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, করপোরেশনের ফান্ড বাড়াতে ইতোমধ্যে আইডিবির সঙ্গে ৮৫০ কোটি টাকা ঋণচুক্তি হয়েছে। এ অর্থ দিয়ে সাত হাজার ৯৭৬টি হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করা সম্ভব। যেখানে ৪৭ হাজার ৮৫৬ জন আবাসন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী (শাওন) এমপি বলেন, ‘গৃহায়ন অর্থায়ন মেলা এই সেক্টরে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।’ গৃহায়ন ঋণের সুদের হার সাড়ে সাত শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সহ-সভাপতি (প্রথম) লিয়াকত আলী ভ‚ইয়া, পরিচালক কামাল মাহমুদ ও শাকিল কামাল চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
প্রসঙ্গত, সারা দেশে বিএইচবিএফসি’র ৩০টি শাখা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নতুন আঙ্গিকে পাঁচটি ভিন্ন প্রোডাক্ট, যেমনÑনগর বন্ধু, প্রবাস বন্ধু, পল্লী মা, আবাসন মেরামত ও আবাসন উন্নয়ন ঋণ চালু করা হয়েছে, যা সব ধরনের ঋণ-প্রত্যাশী মানুষের চাহিদা পূরণ করবে। এ পর্যন্ত করপোরেশন থেকে পাঁচ হাজার ৭২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণের মাধ্যমে সারা দেশে দুই লাখ দুই হাজার ৯৯১টি হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ঋণ মঞ্জুরি করা হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ২৭৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এই ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ৫৪৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আদায়ের হার ৯৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।