আশিকুল ইসলাম, জবি: দেশের একমাত্র অনাবাসিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। শ্লথগতিতে এগিয়ে চলা নবনির্মিত ছাত্রী হলের মাধ্যমে যদিও অচিরে ঘুচে যাচ্ছে এ তকমা। তবু শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গাজনিত সমস্যা কাটছেই না।
এরই মধ্যে পূর্বঘোষিত তারিখ অনুযায়ী আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের সশরীরে পরীক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেও আবাসনজনিত সমস্যায় এখনও বেশ ভোগান্তিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনও চাহিদামতো বাসা খুঁজেই পাননি অনেক শিক্ষার্থী। এর পাশাপাশি পুরান ঢাকার বাড়ি মালিকদের সৃষ্ট কৃত্রিম সংকটেও জিম্মি শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বাড়ি মালিক এবং শিক্ষার্থী তথা ভাড়াটিয়া উভয়পক্ষের পাল্টা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সবুজ বাধ্য হয়ে অনেক বিড়ম্বনার পর একটি বাসা নিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, বাসাটা পছন্দ না হলেও এখন আপাতত পরীক্ষা দেয়ার হিসাব করেই নিতে হলো। প্রথম বর্ষেও এমন বিড়ম্বনার শিকার হইনি।
একই বর্ষের শিক্ষার্থী হাসনাত আহমেদেরও অভিযোগ একইরকম। সম্প্রতি এ শিক্ষার্থী অনেক খোঁজাখুঁজির পর গ্রামের বাড়িতে থেকে ফেসবুকে যোগাযোগ করে একটি সিট ভাড়া নেন। তিনিও আপাতত পরীক্ষার জন্যই বাসা নিয়েছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, ঢাকায় এসে এখন মেস খোঁজা অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। এমন কষ্টকর আবাসন সমস্যা সঙ্গী করে পরীক্ষায় বসতেও আলাদা মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পিত আবাসন ব্যবস্থা থাকলে হয়তো আজ এমন অসহায় অবস্থা হতো না।
এমন বিড়ম্বনায় অনেক শিক্ষার্থী আত্মীয়ের বাসা বা বন্ধুবান্ধবের মেসে থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে চাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমাইয়া খন্দকার এমন আবাসনজনিত সম্ভাব্য বিড়ম্বনার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশ দূরে আত্মীয়ের বাসায় থেকে পরীক্ষাগুলো দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, পরীক্ষার জন্য প্রতিদিন দূর থেকে আসা যাওয়া অনেক কষ্টকর। কিন্তু মেসে থেকে এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষায়ও ব্যাঘাত ঘটবে আমার। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট পাব কি নাÑতা তো জানা নেই। তবু আশা করছি যদি সিট পেয়ে যাই, তবে পুরান ঢাকার এসব সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাব।
আরও কয়েক জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে গ্রামের বাড়ি থেকে আসা যাওয়া করে পরীক্ষায় অংশ নেবেন। সব শিক্ষার্থীর প্রশ্ন, এ বিড়ম্বনার শেষ কোথায়?