আমদানি করা কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় ২৭% কম

ইসমাইল আলী: দেশে গড়ে তোলা হচ্ছে কয়লাভিত্তিক বেশ কিছু বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। এজন্য বিদেশ থেকেই মূলত আমদানি করা হবে কয়লা। যদিও দেশি কয়লার মান তুলনামূলক ভালো। তবে এ কয়লার দাম তুলনামূলকভাবে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি। ফলে আমদানি করা কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় ২৭ শতাংশ কম পড়বে। এজন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় আমদানি করা কয়লা বেশি ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এনার্জি সিকিউরিটি শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বিশ্লেষণ করে এ ব্যয় নিরূপণ করা হয়। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি বিদ্যুৎ বিভাগে জমা দিয়েছে এডিবি।

এতে বলা হয়, দেশি কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে ব্যয় হবে সাত টাকা ৬৫ পয়সা। আর শতভাগ আমদানি করা কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হবে ছয় টাকা তিন পয়সা। অর্থাৎ আমদানি করা কয়লায় উৎপাদন ব্যয় কম পড়বে এক টাকা ৬২ পয়সা বা ২৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনে যদি ৭০ শতাংশ আমদানি ও ৩০ শতাংশ নিজস্ব কয়লা ব্যবহার করা হয় তবে প্রতি ইউনিট ব্যয় পড়বে ছয় টাকা ৫৬ পয়সা। এ হিসাবেও ৪৭ পয়সা ব্যয় কম পড়বে।

প্রতিবেদনে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মূলধনি ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি ডলার। আর এ কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ধরা হয়েছে বছরে প্রায় তিন কোটি ডলার। তবে প্রতিবছর তা ছয় দশমিক ৩০ শতাংশ হারে বাড়বে। কেন্দ্রগুলোর আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ৩০ বছর। ৮০ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে কেন্দ্রটি চলবে বলেও ধরা হয়েছে। আর কয়লার হিট রেট ধরা হয়েছে ৪১ শতাংশ।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে চার শতাংশ সুদে গৃহীত ঋণ ১৫ বছরে পরিশোধ করা হবে। কার্যকরী মূলধনের ওপর সুদহার দিতে হবে ১৩ শতাংশ। করপোরেট সুদহার ৩৫ শতাংশ ধরা হলেও ১৫ বছর শতভাগ সুদ মওকুফ থাকবে কেন্দ্রটিতে। আর রিটার্ন অন ইক্যুইটি ধরা হয়েছে ১২ শতাংশ। আর কেন্দ্রটির ঋণ-ইক্যুইটি অনুপাত ধরা হয়েছে ৮০: ২০।

এক্ষেত্রে প্রতি টন আমদানি করা কয়লার দাম পড়বে ৮৫ ডলার। এ কয়লার মোট কেলোরোফিক ভ্যালু প্রতি কেজিতে পাঁচ হাজার ৫০০ কিলোক্যালরি। এতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় পড়বে ছয় টাকা তিন পয়সা। আর দেশি কয়লার প্রতি টনের দাম পড়বে ১৩০ ডলার। এ কয়লার মোট কেলোরোফিক ভ্যালু প্রতি কেজিতে ছয় হাজার ১০০ কিলোক্যালরি। এতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় পড়বে সাত টাকা ৬৫ পয়সা।

এদিকে ৭০ শতাংশ কয়লা আমদানি ও ৩০ শতাংশ দেশি কয়লা ব্যবহার করা হলে প্রতি টনের দাম পড়বে ৯৯ ডলার। এ কয়লার মোট কেলোরোফিক ভ্যালু প্রতি কেজিতে পাঁচ হাজার ৬৮০ কিলোক্যালরি। এতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় পড়বে ছয় টাকা ৫৬ পয়সা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ শেয়ার বিজকে বলেন, কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কী ধরনের হতে পারে, তা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে এডিবি। তবে সব সময় অবস্থা একই থাকবে, তা নয়। আবার কয়লার গুণাগুণ, বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর ইত্যাদি বিষয় রয়েছে। এছাড়া সুপার ক্রিটিক্যাল বা আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতেও উৎপাদন ব্যয়ে পার্থক্য হবে। তাই এডিবির হিসাবই চূড়ান্ত নয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০