শেয়ার বিজ ডেস্ক: আর্থিক সংকট কাটিয়ে ক্রমেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারও স্ফীত হচ্ছে। আর তাতেই উৎসাহিত হয়ে ২৮৬টি পণ্যের ওপর থেকে তুলে নেয়া হয়েছে আমদানি নিষেধাজ্ঞা। খবর: রয়টার্স।
শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত বছরের শুরুর দিকে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার তলানিতে চলে যাওয়ার ফলে বিদেশ থেকে তেল, ওষুধ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আমদানি বন্ধ হয়। এতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়। এমনকি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ঋণ শোধ করতে না পেরে আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়ে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে-সহ দেশের একাধিক মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। জনরোষের মুখে পড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপক্ষে। ক্ষমতা হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা।
দ্বীপরাষ্ট্রটিকে চরম আর্থিক সংকট থেকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। শ্রীলঙ্কাকে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য দেয়। ওই আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পরই মূলত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে রনিল বিক্রমসিংহের দেশ। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। গত মে মাসে রিজার্ভ ২৬ শতাংশ বেড়ে তিন দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়, যা গত ১৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২৮৬টি পণ্যের ওপর আমদানি বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হলেও ৯২৮টি
পণ্যের ওপর বিধিনিষেধ চালু থাকবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত মে মাসে ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন বিলিয়ন বা ৩৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। শক্তিশালী রেমিট্যান্স আর পর্যটন খাতের আয় দেশটির অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করছে। এছাড়া চলতি বছর শ্রীলঙ্কার রুপির মান প্রায় ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অর্থনীতি স্থিতিশীল হওয়ায় গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ২৮৬টি পণ্যের আমদানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার দেশটির সরকার আগামী ১৫ জুন থেকে প্রয়োজনীয় প্রায় ৬০ শতাংশ ওষুধের দাম ১৬ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। গত বছর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হলেও চলতি বছরে তা তিন শতাংশ হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছে আইএমএফ।