Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:01 am

আমদানি বন্ধের খবরে বাজারে দাম বেড়েছে পেঁয়াজের

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সব স্থলবন্দর দিয়ে গত তিন দিন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ঈদের আগে থেকে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল দেশি পেঁয়াজ। হঠাৎ কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে এখন তা ৪০ টাকায় ঠেকেছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন আমদানি বন্ধ থাকলে দাম আরও বাড়বে। তবে কেউ কেউ বলছেন, বৃষ্টির কারণে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম। এ কারণে দাম বাড়তে পারে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি ও ভারতের পেঁয়াজ একই দামে বিক্রি হচ্ছে। ভরা মৌসুম হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ রয়েছে পর্যাপ্ত। তারপরও ভারতের পেঁয়াজের আমদানি বন্ধের খবরে নড়েচড়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী বিক্রমপুর হাউজের স্বত্বাধিকারী খোকন হোসেন বলেন, ‘ভারতের পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। দুদিন আগেও ২৭ টাকা ছিল। ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে না বলে দাম বেড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজেরও দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। বৃষ্টির কারণে দেশি পেঁয়াজের আমদানি খুব কম। ২৬-২৯ টাকা দরে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ২১-২৫ টাকা।’

এদিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় খুচরা বাজারে দুই ধরনের পেঁয়াজই প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা আগে ছিল ৩০-৩৫ টাকা কেজি। এ বাজারের খুচরা বিক্রেতা সুমন হোসেন বলেন, ‘ঈদের আগে পাইকারিতে ২২-২৪ টাকায় পেঁয়াজ কিনে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গত সোমবার পাইকারি কিনেছি ৩০ টাকা দরে, যা পরিবহন ও অন্যান্য খরচ ধরে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের আমদানি বন্ধের খবরে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন। তারা শুধু দাম বাড়ানোর জন্য অজুহাত খোঁজেন। বাজারে পর্যাপ্ত দেশি পেঁয়াজ রয়েছে। এখন ভারতের পেঁয়াজ না হলেও সংকট হবে না।’

অন্যদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আনেন এমন আমদানিকারকরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির আগের ইমপোর্ট পারমিটের (আইপি) মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে আইপি না পাওয়ায় কয়েক দিন ধরে আমদানি বন্ধ রয়েছে।

ভারতের পেঁয়াজ সবচেয়ে বেশি আসে হিলি স্থলবন্দর হয়ে। সেই স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল ৬৮ ট্রাকে এক হাজার ৯০২ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এরপর ঈদের ছুটি শুরু হয়। ছুটি শেষে শনিবার থেকে বন্দর দিয়ে আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এরপর কোনো পেঁয়াজ আসেনি।

পেঁয়াজ আমদানিকারক শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য আমাদের যেসব ইমপোর্ট পারমিট নেয়া ছিল, সেগুলোর মেয়াদ ছিল ৫ মে পর্যন্ত। ঈদ উপলক্ষে ১ মে থেকে ৬ মে পর্যন্ত ছয় দিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। যে কারণে ওই সময়ের মধ্যে বাড়তি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির ইচ্ছা থাকলেও সেটি সম্ভব হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘সরকার নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট দেয়া বন্ধ রেখেছে, যে কারণে বর্তমানে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিও বন্ধ রয়েছে। তবে পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। এখন  পর্যন্ত অনুমোদন দেয়া হয়নি। কবে দেয়া হবে কিংবা দেয়া হবে কি না, সে ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ কিছু বলছে না।’