আমদানি-রপ্তানিতে করোনার প্রভাব রয়েছে

পুঁজিবাজারে করোনার প্রভাব নেই। কারণ এখনও দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সীমিত। সেজন্য বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। তবে আমদানি ও রপ্তানিতে করোনার প্রভাব রয়েছে। যদি এটা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে দুশ্চিন্তার বিষয়। তবে সে পরিস্থিতি এখনও হয়নি। সোমবার এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে আলোচকদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে।

আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ এবং অনলাইন পোর্টাল অর্থ সূচকের সম্পাদক জিয়াউর রহমান।

সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে করোনার প্রভাব কীভাবে পড়ে এটি বুঝে আসছে না। কারণ দেশে এখনও করোনার আশঙ্কাজনক প্রভাব দেখা যাচ্ছে না বা দৃশ্যমান তেমন কোনো সমস্যা দেখছি না; অর্থাৎ সেখানে সব প্রভাব পুঁজিবাজারের ওপরে দেখা যাচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, আমদানি ও রপ্তানিতে করোনার প্রভাব রয়েছে। কারণ বিদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। যদি সেটা না পারা যায় সেক্ষেত্রে আমদানি ও রপ্তানিতে প্রভাব পড়তেই পারে। আর সেটার প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়তে সময় লাগবে। কিন্তু তার আগেই বাজারে প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আসলে করোনাকে ইস্যু করে একটি গোষ্ঠী বাজারের ফায়দা লুটছে। আবার এ সময় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। তারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে কোনো ভূমিকা পালন করছে না। বলা চলা তাদের ভূমিকা এখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। কেন তারা শূন্যের কোঠায় নেমে এলো। এখানে কী বিএসইসির কোনো দায়িত্ব নেই। যদি বিএসইসি এখানে সঠিকভাবে নজরদারি করত তাহলে বাজারটি একটু ঘুড়ে দাঁড়াত। বাজারে সূচক চার হাজারের নিচে রয়েছে। এখন সূচক চার হাজারের নিচে থাকার কথা নয়। কেন সূচক এ পর্যায়ে এলো। বিষয়টি ডিএসই ও বিএসইসিকে ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।

জিয়াউর রহমান বলেন, বিশ্ব পুঁজিবাজারে করোনাভাইরাসের একটা প্রভাব দেখা যাচ্ছে। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার আগেই বাজার কোনো একটি ভাইরাসে আঁকড়ে ধরেছে। এখন বাজারটি একেবারে মুমূর্ষু ও গতিহীন অবস্থা বিরাজ করছে। আসলে ২০১০ সালে বাজার ধসের পর একবারের জন্য গতিশীল দেখা যায়নি। কিন্তু এ বাজার একটি স্থিতিশীল করার জন্য অনেক চেষ্টা করছে সরকার। এতেও কোনো বাজারে কাজ হচ্ছে না। আরও উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। বাজারের টার্নওভার ২০০ থেকে ৩০০ কোটিতে নেমে আসছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও ব্রোকারেজ হাউসের পরিচালন ব্যয় উঠে আসছে না। কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে ও ব্রোকারেজ হাউসের ব্রাঞ্চ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নতুন করে কোনো কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। পুঁজিবাজারটা বিকশিত হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। অর্থাৎ বাজার বিকশিত না হয়ে আরও সংকোচিত হচ্ছে। আবার সমস্যা যখন বেশি ঘনীভূত হয় তখন আমাদের হুশ হয়। কারণ যখন চীনের পর একের পর এক দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে ওইসব দেশের পুঁজিবাজারে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ওই সময় থেকে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত ছিল। এ করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার কী প্রভাব পড়তে পারে। অর্থাৎ এর একটি আগাম জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পানা করা উচিত ছিল। কেন পরিকল্পনা নেওয়া হলো না। আসলে বিনিয়োগকারীরা সব হারানোর পর যদি মনে হয়, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীকে বাঁচাতে হবে, এটা আসলে কোনো মতেই কাম্য নয়। কারণ পুঁজিবাজারকে বলা হয় অর্থনীতির আয়না। যদি পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেক্ষেত্রে  সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে একটি প্রভাব পড়বে। আসলে এ ব্যাপারে কোনো পূর্বপরিকল্পনা নেই। তাই এ বিষয় এখনই সময় হয়েছে বিবেচনা করা।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০