Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 11:29 pm

আমরা কর্মবিমুখ জাতি গড়তে চাই না

শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার কোনোভাবেই কর্মবিমুখ জাতি গড়ে তুলতে চায় না, বরং যার যা কর্মদক্ষতা আছে তাকে কাজে লাগিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে চায়। তিনি বলেন, কর্মবিমুখ জাতি গড়ে উঠুক সেটা আমরা চাই না; বরং যার যা কর্মদক্ষতা, কর্মশক্তি আছে সেটাকে যেন তারা কাজে লাগাতে পারে সেদিকেই দৃষ্টি দিচ্ছি।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০১৮’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। বাসস।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে বিধবা-বয়স্ক ভাতা দিই তার একটি লক্ষ্য আছে। সেখানে আরেকটি বিষয় আমরা লক্ষ রাখি, তা হলো কেউ যেন সম্পূর্ণভাবে ভাতার ওপর নির্ভরশীল না হয়। যে কর্মক্ষম সে কাজ করে খাবে, কিন্তু সে যেন কোনোভাবেই অভুক্ত না থাকে সেদিকে আমরা লক্ষ্য রেখে অন্তত মাসে যেন ১০ কেজি চাল কিনতে পারে তার সমপরিমাণ এবং সঙ্গে কিছু বেশি টাকা দিচ্ছি। শুধু ভাতার ওপরই যেন তারা নির্ভরশীল না হয়, যার যার কর্মক্ষমতা আছে সে যেন কাজ করে নিজের উপার্জন বাড়াতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই এ ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জিল্লার রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালের সংবিধানে প্রতিবন্ধিত্ব, বৈধব্য, মাতৃপিতৃহীন শিশু, প্রবীণ ব্যক্তিসহ অভাবগ্রস্তদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করেন। তিনি বিভিন্ন জেলায় স্থাপন করেছিলেন সরকারি শিশু সদন। তিনি ১৯৭৪ সালে দারিদ্র্য বিমোচনে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি প্রবর্তন করেন, যা আজও সারা দেশে ‘পল্লি সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রম’ নামে পরিচিত।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে সব ভাতাভোগী যাতে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ঘরে বসে ভাতা পেতে পারে সে লক্ষ্যে তার সরকার ক্যাশ ইনফরমেশন ট্রান্সফার মর্ডানাইজেশন (সিটিএম) প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে, যা দিয়ে ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এর উপকারভোগীরা ভাতা পাবেন।

শিশু-কিশোরদের উন্নয়ন ও কল্যাণে আমাদের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবারের কার্যক্রম চলছে। ছয় বিভাগে ছয়টি ছোটমণি নিবাস (বেবি হোম), একটি দিবাকালীন শিশুযতœ কেন্দ্র, তিনটি দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে।

জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল বাস্তবায়নে তার সরকার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সব সমাজিক নিরাপত্তা সেবাকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এজন্য সমাজসেবা অধিদফতরকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। ৬৪ জেলায় সোশ্যাল সার্ভিসেস কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পও একনেকে অনুমোদন করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ২২টি জেলায় অবিলম্বে এ কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, জাতির পিতাই আমাদের এ জায়গা দিয়ে যান, যেটা আমরা এখন কাজে লাগাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী পরে অনুষ্ঠানস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আগারগাঁওয়ে চার দিনব্যাপী জাতীয় সমাজসেবা মেলারও উদ্বোধন করেন এবং দেশবাসীকেও এ সময় প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।