অবকাঠামো উন্নয়ন, ডেটা সেন্টার নির্মাণ ও দেশজুড়ে ওয়াইফাই হটস্পট সম্প্রসারণে আন্তরিক বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান দেশে ইন্টারনেটের অবস্থানকে সমৃদ্ধ করেছে। এদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড (এএনএল)। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এই আমরা নেটওয়ার্কস। আমরা কোম্পানিজের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এটি।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠান আমরা নেটওয়ার্কস পথচলা শুরু করে ২০০১ সালে। প্রসঙ্গত, আমরা কোম্পানিজের আরেকটি প্রতিষ্ঠান আমরা টেকনোলজিসও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত।
প্রতিষ্ঠানটি দেশব্যাপী ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে। ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) নিয়েও তাদের বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভিডিও কনফারেন্সের ফুল সেটআপ, ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং প্রভৃতি। সম্ভাবনাময় ও উদ্যোমী গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে বেশ সচেষ্ট এই প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশ, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোর তথ্যপ্রযুক্তি খাত বেশ গতিশীল। এই উন্নত বিশ্বের প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নিয়মিত গবেষণা করা হয় আমরা নেটওয়ার্কসে।
আমরা নেটওয়ার্কসের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন সৈয়দ ফারুক আহমেদ। তার সুযোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানটিকে অনন্য করে তুলেছে। তার সঠিক দিকনির্দেশনা ও সামগ্রিক পরিচালনা পদ্ধতির কারণে গ্রাহকের কাছে জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানটি। এর গবেষণা ও উন্নয়ন দেখভালে সচেষ্ট তিনি। ব্যবস্থাপনা টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন সৈয়দ ফরহাদ আহমেদ। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিচালনাসহ বিপণন, মুনাফা অর্জন, প্রতিষ্ঠানটির সম্প্রসারণ, নতুন প্রকল্পের উন্নয়ন, বাস্তবায়ন প্রভৃতি দেখভাল করেন তিনি। চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে রয়েছেন সারফুল আলম।
শুধু মুনাফা অর্জনই নয়, সমাজের উন্নয়নেও নিবেদিত প্রতিষ্ঠান আমরা নেটওয়ার্কস। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনা মূল্যে ওয়াইফাই সুবিধা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ওয়াইফাই হটস্পট স্থাপন করে তারা। এজন্য রেস্টুরেন্ট, কফিশপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, পাবলিক জোন, শপিং সেন্টার, অবসর বিনোদন কেন্দ্র, বাসস্ট্যান্ড প্রভৃতি স্থানে হটস্পট স্থাপন করে। রাজশাহী বিভাগের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই সুবিধা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এখানে বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা। এসব ওয়াইফাই হটস্পটে ২৫ থেকে ৫০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। এই পাবলিক ওয়াইফাই জোনগুলোয় ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য সব ওয়াইফাই হটস্পটে ব্যবহার করা হয়েছে শক্তিশালী ফায়ারওয়াল। এতে রয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ফলে গ্রাহকরা নিরাপদে এসব নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারছে। মূলত বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে ধারাবাহিকভাবে হটস্পট তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এভাবে দেশ ও অর্থনীতির কল্যাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও বিবর্তনে কাজ করছে আমরা নেটওয়ার্কস। সংগত কারণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অনেক পুরস্কারে পূর্ণ তাদের ঝুলি। এর মধ্যে রয়েছে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি (ডব্লিউসিআইটি) পুরস্কার। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে পরপর দুবার সার্ক অঞ্চলের সম্মানজনক ‘পলিকম পার্টনার অব দি ইয়ার পুরস্কার ২০১৭’ অর্জন করেছে আমরা। ২০১৭ সালের পুরস্কারটি এ বছরের শুরুতে ভারতের হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত ‘এসেন্ড ২০১৮ পলিকম পার্টনারস সামিট’-এ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, পলিকম ইনকরপোরেশন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ভিডিও, ভয়েস ও কনটেন্ট সমন্বয়ক ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান।
অতীতে গ্লোবাল অনলাইন সার্ভিসেস লিমিটেড নামে পরিচিত ছিল আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড। দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীদের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে এর জনবল। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৩২৭ কর্মী রয়েছেন। গ্রাহকদের সন্তুষ্টি বিধানে নিরলস শ্রম ও মেধা খাটিয়ে চলেছেন তারা। পরিচালনা পরিষদ তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার ও প্রশিক্ষিত জনবলসহ পরিবেশবান্ধব প্রতিষ্ঠান গড়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কর্মিবান্ধব হিসেবে সুনাম রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। তারা নিয়মিত উন্নত সেবা ও সেরা পণ্য সরবরাহ করছেন গ্রাহকের কাছে।
স্বল্প সময়ের মধ্যে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। গুণগতমান ও স্বকীয়তার ওপর ভর করে টিকে আছে, টিকে থাকবে দীর্ঘদিন। বাজার মনিটরিং ও গবেষণার কারণে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে আছে এবং একই সঙ্গে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ জনশক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ধরে রাখছে আমরা। পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের কার্যকরী দিকনির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
রতন কুমার দাস