২১ বছরে পা রাখল প্রিমিয়ার ব্যাংক

আমি অর্থমন্ত্রী হলে খেলাপিরা পার পেত না: ডা. ইকবাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ডা. এইচবিএম ইকবাল বলেছেন, ‘দেশে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আইন খুবই দুর্বল। এ কারণে ব্যাংক যখন ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতে মামলা করে, তখন খেলাপিরা উচ্চ আদালত থেকে স্টে-অর্ডার নিয়ে আসে। এই সুযোগ পৃথিবীর কোথাও নেই। ঋণ নিলে ফেরত দিতে হবে। এটা ব্যাংকের টাকা নয়, আমানতকারীর টাকা, জনগণের টাকা। জনগণের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। আমি বিষয়টি অনেকবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের নজরে এনেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আনার চেষ্টা করেছি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচিত এ জায়গাটায় দৃষ্টি দেওয়া। আমি অর্থমন্ত্রী হলে প্রথমে এই জায়গাটাতে হাত দিতাম। তাহলে দেশের ব্যাংক খাতে কোনো খেলাপি ঋণ থাকত না। ছোটো-বড় কোনো খেলাপি গ্রাহকই পার পেত না। ব্যাংক থেকে টাকা নিলে টাকা ফেরত দিতে হবে। কোনো মাফ নেই।’

গতকাল শনিবার রাজধানীর বনানীর ইকবাল সেন্টারে দি প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. এইচবিএম ইকবাল এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইনে এতই কড়াকড়ি যে ঋণ নিয়ে ফেরত না দিলে পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র, সরকারি সুযোগ-সুবিধা সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়। জনগণের টাকার কোনো অপব্যবহার তারা সহ্য করে না।’ 

সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় না বলে দাবি করেছেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডা. এইচবিএম ইকবাল। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) প্রথম দিনই বলেছি, আমি কোনো চাপ দেব না। তাহলে অন্য কোনো পরিচালক যদি চাপ দেন, তিনি (এমডি) ভয় পাবেন কেন? চাপ দিলে আমাকে বলবেন, আমি ওই পরিচালককে ধরব। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, কাউকে ভয় করি না।’

এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘এমডি আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি থাকতে এই ব্যাংকে কোনো মন্দঋণ সৃষ্টি হবে না। আমি বিশ্বাস করি, এমডি, শাখা ব্যবস্থাপক ও অন্য কর্মীরা জড়িত না থাকলে কোনো ব্যাংকে মন্দঋণ সৃষ্টি হতে পারে না। এ কথা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।’

প্রিমিয়ার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী এম রিয়াজুল করিম (এফসিএমএ) জানান, বর্তমানে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ৬৫০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের চার দশমিক ৫০ শতাংশ। খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়েছে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ডা. ইকবাল বলেন, ‘যে ঋণ অনুমোদন দিলে ব্যাংকের লোকসান হতে পারে, এমডি সেই ঋণ অনুমোদন দেবেন না। দরকার হলে এমডি চাকরি করবেন না বলে জানিয়ে দেবেন। অনেক বছর আগেই ঘোষণা করেছি যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে আমিও যদি বলি, আমাকে আপনারা (ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ) বোঝাবেন যে কাজটি ব্যাংকের পরিপন্থি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মঈন ইকবাল, পরিচালক আবদুস সালাম মুর্শেদী, মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল, জামাল জি আহমেদ, উপদেষ্টা মুহাম্মদ আলী প্রমুখ।

জানা গেছে, বেসরকারি খাতের দি প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ দুই দশকে ব্যাংকটি প্রায় সব ধরনের আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানের মধ্য দিয়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ একটি ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটির শাখার সংখ্যা ১০০টি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০