আমের আচার ও সুস্বাদু খাবার তৈরি করে স্বাবলম্বী

আমকে বলা হয় ফলের রাজা। ভালো ফলন নিশ্চিত হলে প্রচুর পরিমাণে আম উৎপন্ন করা যায়। উৎপাদিত আম বিভিন্নভাবে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে। এমনকি ঝরে পড়া আম দিয়েও নানা ধরনের আচার তৈরি করে তা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়। এমনই উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিগ্রামের নারীরা।
এ গ্রামের শাহ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের উদ্যোগে গাছ থেকে ঝড়ে যাওয়া আম থেকে নানারকমের সুস্বাদু আচার তৈরি করতে নারীদের উদ্বুদ্ধ করে সংগঠিত করা হয়েছে। এ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে ওই গ্রামের বেশিরভাগ নারী এখন আমের নানা রকম আচার ও রকমারি খাবার করছেন। এতে একদিকে যেমন ঝড়ে যাওয়া আমগুলো নষ্ট হয়নি, অন্যদিকে এসব আচার মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছে আর অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা।
শাহ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘর কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বিভিন্ন সময় যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সারা দেশে ইতোমধ্যেই সুখ্যাতি অর্জন করেছে। পাঠাগারের উদ্যোক্তা রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলম শাহ চৌধুরী ঝড়ে কিংবা অন্য কোনো কারণে গাছ থেকে পড়া আম কুড়িয়ে নানারকমের আচার তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন স্থানীয় নারীদের। কালিগ্রামের প্রায় সব বাড়ির নারীরা এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৈরি করেছেন হরেক রকমের আচার। এসব আচার প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করেন জাহাঙ্গীর।
গৃহিণী মৌসুমী চক্রবর্তী, ছাত্রী তানিয়া খাতুন ও গৃহিণী হালিমা খাতুন জানিয়েছেন, তারা এ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চিনিতে আমের সন্দেশ, আমের জুস, আমের রসমালাই, আমের চমচম, আমস্বত্ব, আমচুর, আমের নবাবী, আমের বরই, আমের চচ্চড়ি, ডুবো আম প্রভৃতিসহ শতাধিক সুস্বাদু খাবার তৈরি
করা শিখেছেন।
জাহাঙ্গীর আলম ও জ্যোৎস্না বেগম নামের একজন সদস্য রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিটিউটে আমের আচার ও বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবার তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তী সময়ে তারা কালিগ্রামের প্রায় সব গৃহিণীকে প্রশিক্ষণ দেন। এ প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে তারা আচার তৈরি করেন।
গ্রামের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি প্রায় ৮০ বছর বয়সী আবদুর রাজ্জাক বলেন, নারীদের এমন উৎসবমুখর পরিবেশে আচার তৈরি করা ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে অন্যকে উদ্বুদ্ধ করা এখানে বিরল। এর আগে এমন কোনো উদ্যোগ তিনি দেখেননি।
এ উদ্যোগের ফলে গ্রামের কোথাও আমগাছের নিচে আর পরিত্যক্ত আম পড়ে থাকতে দেখা যায়নি এবার। সব আম কাজে লাগিয়ে আচার তৈরি করেছেন নারীরা। এ উদ্যোগ একসময় বৃহৎ বাণিজ্যে পরিণত হবে বলে মনে করেন তিনি।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএফএম গোলাম ফারুক বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।

কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০