শেয়ার বিজ ডেস্ক :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা যখন ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি, তখন এই দুর্যোগটা (আম্পান)। এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এতে কারো হাত নেই। এটা আমরা ঠেকাতে পারব না কিন্তু মানুষের জানমাল যতটুকু রক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা আমরা নিতে পারি এবং সেটা আমরা নিয়ে যাচ্ছি।
আজ বুধবার গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভায় যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের যে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল এবং প্রত্যেক এলাকাভিত্তিক কমিটিগুলো আছে তারা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে সবাইকে যেমন সজাগ করে দেওয়া আর ব্যাপকভাবে সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করা আছে। সেগুলো আমরা যেমন বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজে ব্যবহার করি কিন্তু সেই সঙ্গে আবার দুর্যোগ যখন আসে তখন আবার শেল্টারের ব্যবস্থা করি।
এছাড়াও করোনাভাইরাস সংকটে দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ, কৃষক লীগের ধান কাটার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ধন্যবাদ দেন এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কাভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পান বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৩০৭ জন মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে সরকার।এছাড়া ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২টি গবাদিপশুকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে বলে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন।ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় সরকারের সবশেষে প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, একটি লোককেও যেন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ছেড়ে না আসা হয়- আমরা সেই নির্দেশ দিয়েছি। লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১২ হাজার ৭৮টি থেকে বাড়িয়ে ১৪ হাজার ৩৩৬টি করা হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৩০৭ জনকে নেওয়া হয়েছে, এটাই এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ সংখ্যা।এর আগে ঘূর্ণিঝড় ফণির সময় ১৮ লাখ এবং বুলবুলের সময় ২২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল।ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের পাশাপাশি ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২টি গবাদিপশুকেও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
জরুরি ওষুধসহ মেডিকেল টিম প্রস্তুত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন তাদের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে।আশা করছি, আমরা আম্পান থেকে রক্ষায় সর্বোচ্চ সফলতা পাব।ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করে ১৪ হাজার ৩৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৭ লাখ ১৩ হাজার ৬০৭ জন মানুষকে রাখা সম্ভব। তা না করে দূরত্ব নিশ্চিত করতে অর্ধেক লোক রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভাষাণচরের ১২০টি শেল্টারের মধ্যে একটিতে কিছু মানুষকে রাখা হয়েছে জানিয়ে এনামুর বলেন, তাদের তদারকিতে নৌবাহিনী রয়েছে, তাদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এর আগে বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভা হয়। সেখানে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি সম্পর্কে সরকারপ্রধানকে অবহিত করা হয় বলে জানান এনামুর।