নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড মহামারির জন্য এবারও আয়কর মেলা হচ্ছে না। কর অঞ্চলে মেলার পরিবেশে হবে মিনি করমেলা। সেজন্য এনবিআর নভেম্বর মাসকে করসেবা মাস ঘোষণা করেছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে করসেবা মাস শুরু হবে। মিনি করমেলায় উৎসমুখর পরিবেশে করদাতারা রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইএন গ্রহণসহ সব সেবা পাবেন। আর ৩০ নভেম্বর পালন করা হবে আয়কর দিবস। করসেবা মাস ও আয়কর দিবস উদযাপনে কর অঞ্চলগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে এনবিআর।
এনবিআরের আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আয়কর রাজস্ব আহরণের প্রধান খাতই নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠারও কার্যকরী মাধ্যম। আয়করের মাধ্যমে রাজস্বের বৃহত্তম অংশ আহরণের ক্ষেত্রে সব দেশই সচেতন প্রয়াস চালায়। কিন্তু কর আহরণ কার্যক্রম বিশ্বের সব দেশেই একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আয়কর সম্পর্কে ভীতি দূর, কর সচেতনতা বৃদ্ধি ও আরও নিবিড় করসেবা প্রদানের জন্য আয়কর বিভাগ ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো নভেম্বর মাসকে করসেবা মাস ঘোষণা করে।
কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, বাঙালি জাতির উৎসবমুখর চিরায়ত সামাজিক জীবনের সঙ্গে যদি আয়কর আহরণের মতো জটিল বিষয়কে যুক্ত করে দেয়া যায়, তাহলে করদাতারা উৎসবের আমেজে আয়কর প্রদানের সুযোগ পাবেন। এর মাধ্যমে কর সচেতনতাসহ রাজস্ব আহরণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। যে কারণে করসেবা মাসে প্রতিটি কর অঞ্চলে মেলার আদলে করসেবা প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিদ্যমান বৈশ্বিক মহামারি পরিস্থিতিতে আয়কর মেলা আয়োজনের পরিবর্তে সব কর অঞ্চলে বিগত বছরের মতো মেলার পরিবেশে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য সেবা প্রদান করা হবে। কর সংস্কৃতি বিকাশ, কর সচেতনতা বৃদ্ধি, করদাতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের লক্ষ্যে নভেম্বর মাসব্যাপী করসেবা প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১ নভেম্বর সকাল ১০টায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে করসেবা মাস উদ্বোধন করা হবে। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম করসেবা মাস উদ্বোধন করবেন।
করসেবা মাস উদযাপন উপলক্ষে রেডিও, টেলিভিশন, প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইনভিত্তিক মিডিয়ায় প্রচার কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। আয়কর প্রদানে উৎসাহ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। যাতে এনবিআরের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করবেন। করসেবা মাস উদযাপন উপলক্ষে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আয়কর সংক্রান্ত একটি থিম সং, জনসচেতনতামূলক নাটিকা ও সংশ্লিষ্ট একটি টিভি স্পট প্রস্তুতপূর্বক বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আয়কর বিষয়ে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ পোস্টার ও উৎসাহব্যঞ্জক সেøাগানসংবলিত স্টিকার, বেলুন, বর্ণিল ফেস্টুন ও ব্যানার বিভিন্ন কর অঞ্চলে স্থাপন করা হবে।
করসেবা মাসে মিনি করমেলায় করদাতারা কর অঞ্চলে যেসব সুবিধা পাবেন তাহলোÑকরদাতারা নির্ধারিত কর অঞ্চলে তাদের ২০২২-২৩ করবর্ষের নিজ নিজ আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। প্রতিটি কর অঞ্চলের ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফরম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশিত থাকবে। দেশব্যাপী ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অফিস চলাকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে আয়কর রিটার্ন গ্রহণ করা হবে। কর অঞ্চল-৪, ঢাকার ব্যবস্থাপনায় সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাবে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেলপ ডেস্ক স্থাপন এবং পরিকল্পনা কমিশনে ৫ দিন কর তথ্য সেবা প্রদান করা হবে। সশ্রস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে ৯ ও ১০ নভেম্বর করদাতাদের রিটার্ন গ্রহণ ও কর তথ্য সেবা প্রদান করা হবে। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সিস্টেমটি চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে করদাতারা সিস্টেমে রেজিস্টেশন করাসহ রিটার্ন তৈরি এবং রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।