নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনের রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গতকাল আয়কর দিবসের অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এ ঘোষণা দেন। প্রতিবছরের মতো এবারও ১ নভেম্বর থেকে আয়কর সেবা মাস শুরু করেছিল এনবিআর। নিয়ম অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই আয়কর বিবরণী দাখিলের সুযোগ ছিল করদাতাদের। তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন এই সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। এফবিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েও এ দাবি জানানো হয়েছিল।
আয়কর দিবসের অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান ‘আয়কর সেবা মাস’ এক মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলেন, এখন ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিনা জরিমানায় রিটার্ন দেয়া যাবে। আমরা চাইছি রিটার্ন জমা বাড়াতে। মানুষকে আরও বেশি সুযোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) ড. সামস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ লাখ করদাতার আয়কর রিটার্ন রাজস্ব বোর্ডে জমা পড়েছে, গত বছর একই সময়ে জমা পড়েছিল ১৫ লাখ ৫০ হাজার রিটার্ন। এক মাস সময় বাড়ানোয় রিটার্ন জমার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।
দেশে বর্তমানে করদাতা শনাক্তকরণ নম্বরধারী নাগরিক আছেন ৮২ লাখের বেশি। চলতি অর্থবছর থেকে ব্যাংকঋণ নেয়াসহ ৩৮টি সেবার ক্ষেত্রে আয়কর জমার প্রমাণপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০১৬ সালে আয়কর অধ্যাদেশে পরিবর্তন এনে ৩০ নভেম্বর জাতীয় কর দিবসের পর রিটার্ন জমা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে মহামারির কারণে গত দুই বছর ওই সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছিল, এবারও তা-ই হলো।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা, সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপের বিধান রয়েছে। ১২৪ ধারায় বলা আছে, করদাতা যদি কোনো কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করেন, আবার এজন্য অনুমোদনও না নেন, সেজন্য তার পূর্ববর্তী বছর প্রদেয় করের ১০ শতাংশ বা এক হাজার টাকার মধ্যে যেটি বড় অঙ্ক, ওই পরিমাণ অর্থ জরিমানা হবে। সেইসঙ্গে যত দিন দেরি হবে, প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা জরিমানা আদায়ের বিধান রয়েছে।