Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 11:45 pm

আরও ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৭৪৮ রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত) সারাদেশে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১৬ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৭৪৮ জন।

গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৭৪৮ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার বাসিন্দা এক হাজার ৫১ জন ও ঢাকার বাইরের এক হাজার ৬৯৭ জন।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৫ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৬ হাজার ৬৫ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন ৭৯ হাজার ২৭০ জন।

বছরের একই সময়ে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৩৪ হাজার ৪২১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬১ হাজার ১৪১ জন এবং ঢাকার বাইরের ৭৩ হাজার ২৮০ জন।

এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।

কভিডকালে (২০২০ সাল) ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এবার জনবহুল এলাকা এবং অপেক্ষাকৃত নি¤œাঞ্চলে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে বেশি, বিশেষ করে যেসব এলাকার বসতবাড়ির চেয়ে রাস্তা উঁচু। এমনটা হওয়ার কারণে বিভিন্ন বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি জমে থাকে, হয়ে ওঠে ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশার সবচেয়ে বড় প্রজননস্থল। শুধু রাজধানীতে নয়, এমন অবস্থা অন্য শহরগুলোয়ও। অন্তত পাঁচ বছরের প্রায় প্রতিবার এডিস মশা প্রজননের বড় উৎসস্থল ছিল ভবনের মেঝে বা ছাদ। কীটতত্ত্ববিদ, জনস্বাস্থ্যবিদ ও নগরবিদেরা বলছেন, নগরে এডিসের বিস্তার অন্তত তিনটি প্রবণতা তুলে ধরেÑএক. অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ হচ্ছে; দুই. ডেঙ্গু প্রতিরোধে যথাযথ প্রচারের যথেষ্ট অভাব রয়েছে এবং তিন. এডিসের বংশবিস্তার রোধে সংশ্লিষ্ট নানা কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব রয়েছে।

তাছাড়া ডেঙ্গু মোকাবিলার মূল আলোচনা শহরকেন্দ্রিক, মূলত রাজধানী ঘিরে। বাস্তবে এবার ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগী বেশি। রোগতত্ত্ববিদরা বলছেন, ঢাকার বাইরের বাস্তব পরিস্থিতির কোনো চিত্র কারও জানা নেই। বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সময়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঘাটতির নানা দিক তুলে ধরছেন। তারা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে গ্রামে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া দরকার। ঢাকার বাইরে ভিন্ন ধরনের মশায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।