Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:41 am

আরও ৪ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের কারণে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। গতাকল শুক্রবার এক পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বার্তায় এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

বৃষ্টিপাতের মধ্যে দেশের নদ-নদীর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদর রহমান জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ ও সারা দেশে বৃষ্টির কারণে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতলে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় এ প্লাবন হতে পারে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা ও ধরলা নদীগুলোর পানি সমতলে বাড়ছে। অন্যদিকে দুধকুমার নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (২৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে এবং পরবর্তী দুদিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীগুলোর পানি সমতলে আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দ্রুত বাড়তে পারে। পরবর্তী এক দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল এবং পরবর্তী এক দিন কমতে পারে।

এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্ক-সীমায় প্রবাহিত হতে পারে এবং জেলাগুলোর সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। অন্যদিকে আগামী তিন দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমার নদীগুলোর পানি সমতলে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। রংপুর বিভাগের অন্য প্রধান নদীগুলো আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, টাঙ্গন, পুনর্ভবা, ইছামতী-যমুনা ও যমুনেশ্বরী নদীগুলোর পানি সমতলে বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগের এসব নদীর পানি সমতলে বাড়তে পারে, যা পরবর্তী এক দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী এক দিন নদীগুলোর পানি সমতলে কমতে পারে।

রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতলে বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল থাকতে পারে। রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর পানি সমতল কমছে এবং তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুদিন পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীগুলোর পানি সমতলে ধীর গতিতে কমতে পারে, পরবর্তী এক দিন পানি সমতলে স্থিতিশীল এবং পরবর্তী দু’দিন বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীগুলোর পানি সমতলে বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরবর্তী তিন দিনে নদীগুলোর পানি সমতলে কমতে পারে। অন্য প্রধান নদীগুলো মনু, খোয়াই, ধলাই নদীগুলোর পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে সোমেশ্বরী, ভুগাই নদের পানি সমতলে বাড়ছে এবং সারিগোয়াইন, কংস নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল রয়েছে। এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরবর্তী তিন দিন পর্যন্ত পানি সমতলে কমতে পারে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, গোমতী নদীর পানি সমতলে কমছে। অন্যদিকে হালদা নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল আছে। আগামী তিন দিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) কম প্রবণতা রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি সমতলে কমতে পারে। বাংলাদেশ আবহাওয়া সংস্থার তথ্যানুযায়ী, সংশ্লিষ্ট বঙ্গোপসাগর এলাকায় কোনো লঘুচাপ না থাকায় আগামী তিন দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোয় স্বাভাবিক জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে।