আরও ৯৪৭ বাসে ই-টিকেটিং চালুর ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে আরও ৯৪৭টি বাসে ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। আজ বুধবার থেকে যা কার্যকর হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। রাজধানীতে তৃতীয় পর্বে বাসে ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালুর বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আগে চালু হওয়া ই-টিকেটিং ব্যবস্থা এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। এখনও ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে এনায়েত উল্যাহ জানান, তাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যাত্রীরাও যেন টিকিট ছাড়া ভাড়া না দেন।

রাজধানীতে চলাচলকারী অধিকাংশ বাস লক্কড়ঝক্কড় হওয়ায় বসার পরিবেশ নেই। এ অবস্থায় বাসে যাত্রীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে মালিক সমিতির এ নেতা বলেন, আগে তারা ভাড়া নিশ্চিত করতে চান। পরে অন্য বিষয় দেখবেন।

ঢাকা ও তার আশপাশ এলাকায় ৯৭টি কোম্পানির অধীনে ৫ হাজার ৬৫০টি বাস চলাচল করে বলে জানান এনায়েত উল্যাহ। তিনি বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে তারা গত বছরের ১৩ নভেম্বর প্রথম দফায় ৩০টি কোম্পানির ১ হাজার ৬৪৩টি বাসে ই-টিকেটিং চালু করেছিলেন। দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি ১১টি কোম্পানির ৭১৭টি বাসে এ ব্যবস্থা চালু করা হয়। আজ তারা তৃতীয় পর্বে ১৩টি পরিবহন কোম্পানির ৯৪৭টি বাসে এ পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দিলেন।

ই-টিকেটিং পদ্ধতি কার্যকর করা অনেক কঠিন বলে দাবি করেন পরিবহন মালিক সমিতির এ নেতা। তিনি বলেন, এটি বাস্তবায়ন করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে তারা অনেক দল রাস্তায় নামিয়েছেন। অনিয়ম বন্ধে ৯ জন ‘স্পেশাল চেকার’ নিয়োগ দিয়েছেন। আরও ১০ জন নিয়োগ দেবেন। তবে ভাড়া নিয়ে অনিয়ম দূর করতে আরও সময় লাগবে।

ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু হলেও ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় হচ্ছে সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘এই কাজ তো শুরু করেছি যাত্রীদের সুবিধার জন্য, তারা যাতে ন্যায্য ভাড়া থেকে বঞ্চিত না হন। গেটলক ও সিটিং সার্ভিস বন্ধের মতো ই-টিকেটিংও একসময় কার্যকর হবে। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে কিনা, আমরা কাজ করছি কিনা, সেটা দেখার বিষয়। আমরা আরও ১০টা লোক নিয়োগ দিচ্ছি। নিজেরা মাঠে যাচ্ছি। আমরা তো বসে নেই। আমরা চাই যাত্রীরাও যেন টিকিট ছাড়া ভাড়া না দেন।’

কোনো বাসে চালক ও তার সহকারী বেতনে কাজ করছেন না। তারা চুক্তিতে কাজ করছেন। এরকম বিশৃঙ্খলা তো লেগেই আছেÑসাংবাদিকের এমন তথ্যের জবাবে এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘বেতনেও আছে, চুক্তিতেও আছে। আমরা চুক্তিটা বন্ধ করতে চাচ্ছি। ই-টিকেটিং পুরোপুরি চালু হলে চুক্তিতে চালানো বন্ধ হয়ে যাবে।’

কিছু বাসের সিটে বসার মতো অবস্থাও থাকে না। যাত্রীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা হচ্ছে না কেন আরেক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে পরিবহন মালিক সমিতির এ নেতা বলেন, ‘যাত্রীবান্ধব পরিবেশসহ অন্য কাজ একসঙ্গে করতে পারব না। আমরা আগে ভাড়াটা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। তারপর আমাদের অন্য পরিকল্পনা আছে।’

ধর্মঘটের ডাক দেয়া হলে সব বাস একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যাত্রীদের ভালোর জন্য ই-টিকেটিং কার্যকর হচ্ছে না কেনÑএ প্রশ্নের জবাবে এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘শ্রমিকদের সঙ্গে এ নিয়ে কয়েকবার বসেছি। প্রতিটি কোম্পানিকে বলা হয়েছে, তারা যাতে শ্রমিকদের সচেতন করার উদ্যোগ নেন। কোথায় কোথায় কাজ করা উচিত, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

চালকের সহকারীরা ই-টিকেটিং পদ্ধতিতে ভাড়া কাটেন না। তারা বেশি ভাড়া আদায় করছেন। এ অভিযোগের বিষয়ে পরিবহন মালিক সমিতির এ নেতা বলেন, ‘এখানে আর্থিক বিষয় জড়িত। কাজেই এটা তো বুঝতে পারছেন। তাই তো চেকার বসিয়েছি।’

রাজধানীর সব বাসকে এক ছাতার নিচে আনার জন্য বাস রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে ঢাকা নগর পরিবহনের বাস নামানো হয়েছে। নগর পরিবহনের বাসে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা। এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আমরা ঢাকা নগর পরিবহনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা নয়, তাদের সহযোগিতা করতে চাই।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০