আরমানিটোলা অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর পুরান ঢাকার রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চারজন হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা রাসেল শিকদার বলেন, শুক্রবার সকাল ১১টায় আরও দুজনের দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, পাঁচতলার মেঝেতে দুজনের লাশ পাওয়া যায়। তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

এ নিয়ে এ ঘটনায় এক নারীসহ চারজনের মৃত্যু হলো। হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন আরও চারজন।

বৃহস্পতিবার ভোররাতে আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় সংঘটিত এ অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটি প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল ৬টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা মাহফুজ রিভেন বলেন, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে একজন সুমাইয়া আক্তার (২২) বলে জানা যায়, আরেকজন নিরাপত্তাকর্মী। ওই নারীকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির বলেন, সুমাইয়া ওই ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তিনি ইডেন কলেজের ইংরেজি বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

অগ্নিকাণ্ডের পর পাশের এটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে মই দিয়ে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের বের করে আনা হয়। কিন্তু সুমাইয়া অচেতন হয়ে মেঝেতে পড়ে যায়। তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত নিরাপত্তাকর্মী রাসেলের (৩০) মৃতদেহ দগ্ধ অবস্থায় দ্বিতীয় তলা থেকে উদ্ধার করা হয় বলে শাহীন জানান।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ও ধোঁয়ায় আক্রান্ত হওয়া অসুস্থ ২০ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তন্ময় প্রকাশ ঘোষ বলেন, ভোরে আরমানিটোলার আগুনের ঘটনায় ২১ রোগী হাসপাতালে আসেন।

তাদের মধ্যে একজনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকি ২০ জনকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

তারা হলেন একই পরিবারের আশিকুজ্জামান (২৮), তার স্ত্রী ইশরাত জাহান মুনা (২৭), মুনার বাবা ইব্রাহিম সরকার (৬০), মা সুফিয়া বেগম (৫০), মুনার ভাই জুনায়েদ (১৮), আরেক পরিবারের দেলোয়ার হোসেন (৫৫), স্ত্রী লায়লা বেগম (৪৫), দুই ছেলে শাফায়াত হোসেন (৩২) শাকির হোসেন (৩০), শাফায়াতের স্ত্রী মিলি আক্তার (২৩) ও তাদের দুই বছরের মেয়ে ইয়াশফা, খোরশেদ আলম (৫০), স্ত্রী চেশমেয়ারা বেগম (৪৫), ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (২৭), আকাশ (২২), আসমা সিদ্দিক (৪৫), মেহেরুন্নেছা (৫০), পাবিহা (২৬), উনশি মোল্লা (৪০) ও মো. ফারুক হোসেন (৫৫)।

ডা. তন্ময় প্রকাশ ঘোষ বলেন, ভর্তি রোগীদের মধ্যে আশিকুজ্জামান, ইশরাত জাহান মুনা, খোরশেদ আলম ও শাফায়েত হোসেনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। খোরশেদ আলমের ২২ শতাংশ ও শাফায়েতের ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। বাকিরা সবাই ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মাহফুজ বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ছয়তলা ওই ভবনের ছাদে ও নিজেদের ফ্ল্যাটে আটকে পড়েন ভবনের বাসিন্দারা। তাদের জানালা ও বারান্দার গ্রিল কেটে বের করে আনা হয়েছে।

এখন দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ছয়তলা ভবনটিতে নিচতলায় দোকান ও রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম ছিল বলে এলাকাবাসী জানান। তবে বাকি তলায় নানা পরিবার বসবাস করত।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০