Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 12:40 pm

আরেকবারের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাদের দল যে আরও এক মেয়াদে দেশের ‘নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত’, ২৪ ডিসেম্বর ‘সুশৃঙ্খল সম্মেলনের’ মাধ্যমে দেশবাসীকে তারা সেটা দেখাতে চান। কাদের বলেন, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) একটি সুশৃঙ্খল সম্মেলন দেখতে চান। জাতিকে দেখাতে চান, আওয়ামী লীগ আবারও এই দেশের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।’ দলের জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে গতকাল ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটি এবং মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির যৌথ সভায় ক্ষমতাসীন দলের এ নেতার এমন মন্তব্য আসে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে ‘সুশৃঙ্খল’ কর্মিবাহিনী ছাড়া সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় বলে মনে করেন দলের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের পূর্বশর্ত শৃঙ্খলা। সভা করব সুশৃঙ্খলভাবে। আমার ধারণা, এবার ঐতিহাসিক সম্মেলন হবে। কারণ সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে যে গণজাগরণের ঢেউ, গোটা দেশ জেগে গেছে বিজয়ের মাসে। যেখানেই সমাবেশ করেছি, সেখানে স্রোতের মতো মানুষ। সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ যেন আছড়ে পড়েছে। এরকম তরঙ্গ বিক্ষোভ দেখতে পাচ্ছি।”

বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে মানুষের ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিতি’ প্রত্যাশা করে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ব্যবস্থাপনাটাও ভালোভাবে করতে হবে। সম্মেলন সাদামাটা হবে। উপস্থিতি সাদামাটা হচ্ছে না। এটা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে আমার বিশ্বাস। সাদামাটা সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জা হবে।”

বিএনপির ‘রাষ্ট্র মেরামতের’ কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্রকে যারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, তারা আবার এ রাষ্ট্র মেরামত করবে! মেরামত তো শেখ হাসিনা করেছেন। করেছেন বলেই তো আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। (বিএনপি) গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধ্বংস করেছে। দুর্নীতি ও লুটপাট করে কোষাগার খালি করেছে। রিজার্ভ চার বিলিয়ন ডলারেরও নিচে ছিল। আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছেন। ’

বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের ‘যুগপৎ আন্দোলনের’ কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে অনেকে রাষ্ট্র মেরামত করার প্রয়াস নিয়েছে। গতবারও ২৩ দল ছিল। এবার ৩৩ দল। বাম, ডান, এর মধ্যে প্রগতিশীল আর প্রতিক্রিয়াশীল একসঙ্গে হয়ে গেছে। সব এক কাতারে একাকার, লক্ষ্য কী? শেখ হাসিনাকে হটানো। শুনেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশের কাউন্টার ভিশন-২০৩০, বিএনপির। সেটা কোথায়? এখন তারা কর্মসূচি দিয়ে দেখাচ্ছে, তারা আছে। তাদের নেতাকর্মীরা বহুদিন ক্ষমতায় নেই, তাতেই খায় খায় ভাব। তাদের একটু খুশি রাখতে হবে। সেজন্য অনেক কথা বলছে।”

দলীয় কর্মসূচিতে বহু চর্চিত কিছু প্রথা থেকে বেরিয়ে আসতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তাগিদ দেন সাধারণ সম্পাদক।

কিছু সভায় অতিথিদের নাম বলতে বলতেই সময় শেষ হয়ে যায় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কোনো নেতা অখুশি হবেন। এটাও মাথায় থাকে, পরবর্তী সময়ে পদায়নে সমস্যা হতে পারে। এসব চিন্তা করেও তিনি অনেকের নাম বলেন। এগুলো থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কাউকে দুই মিনিট সময় দিলে, তিনি পাঁচ মিনিটই সম্বোধন করতে করতে সময় শেষ করে দেন। মাগরিবের নামাজের আজান দিচ্ছে, তখন প্রধান অতিথি সময় পান। মিটিংয়ের প্রধান অতিথির বক্তব্য শ্রোতাদের শুনতে দিতে হবে। না হলে এটা তো অসম্পূর্ণ থেকে যায়।’

নেতাকর্মীদের ‘দেশের মানুষের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে মিল রেখে’ পথ চলার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষ কী চাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম কাজ মানুষকে রক্ষা করা। সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেয়া হয়েছে। এখনও (বৈশ্বিক সংকটে) বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও শৃঙ্খলা উপকমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে এ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।