আরেকবার ভাঙল সর্বোচ্চ লোডশেডিংয়ের রেকর্ড

বিশেষ প্রতিনিধি: কয়লা সংকটের কারণে গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় বন্ধ হয়ে গেছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর এবারই প্রথম পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ হলো। এর আগে কয়লা সংকটে ২৫ মে একটি ইউনিট বন্ধ হয়েছিল দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির। যদিও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার আগে জুনেই দ্বিতীয়বার ভেঙেছে সর্বোচ্চ লোডশেডিংয়ের রেকর্ড।

সূত্র জানায়, সোমবার (৫ জুন) মধ্যরাতে লোডশেডিংয়ের নতুন রেকর্ড হয় রাত ১টায়। ওই সময় তিন হাজার ২১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়। আর রাত ২টায় লোডশেডিং করা হয় তিন হাজার ১৪৩ মেগাওয়াট। এরপর লোডশেডিং কিছুটা কমলেও গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত উচ্চ হারে লোডশেডিং অব্যাহত ছিল। এর মধ্যে সকাল ১০টায় ও বিকাল ৪টায় দুই হাজার ৮০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়। বাকিটা সময়ও লোডশেডিং আড়াই হাজার মেগাওয়াটের নিচে নামেনি।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তা মনে করছেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ায় সারাদেশে লোডশেডিং আরও বাড়বে। এ কেন্দ্রটি সমগ্র বরিশাল, খুলনা ও ঢাকার কিছু অংশের বিদ্যুতের উৎস ছিল। তবে তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েক দিন ধরেই উচ্চহারে লোডশেডিং হচ্ছে। এর মধ্যে ৩ জুন দিবাগত রাত ১২টায় রেকর্ড লোডশেডিং হয়েছিল। ওই সময় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৮১ মেগাওয়াট। আর ৪ জুন রাত ১টায় লোডশেডিং করা হয় তিন হাজার ২৪ মেগাওয়াট।

যদিও লোডশেডিং থেকে আশু মুক্তি মিলছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ ডলার সংকটে জ্বালানি তেল ও কয়লা আমদানি ব্যাহত হচ্ছে।

সূত্রমতে, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদন করতে মাসে গড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন কয়লা লাগে। কিন্তু ডলার সংকটে কয়লা সরবরাহের জন্য এলসি খুলতে পারছিল না চীনের সিএমসি। এজন্য ২৯৮ মিলিয়ন ডলার চেয়ে গত ২৭ এপ্রিল চিঠি দেয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে। এর মধ্যে এপ্রিলেই ৭০ মিলিয়ন এবং পরবর্তী প্রতি মাসে ৫০ মিলিয়ন করে দেয়ার কথা বলা হয়।

যদিও চাহিদামতো ডলার পায়নি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)। এ পর্যন্ত মাত্র ৮৮ মিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে। তবে এরই মধ্যে এলসি খোলা হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা সরবরাহের জন্য। চলতি মাসের শেষ দিকে এ কয়লা দেশে এসে পৌঁছাতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান সিএমসির যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত। এতদিন পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রকে ছয় মাস বাকিতে কয়লা দিয়েছে সিএমসি। পরে আরও তিন মাসের বকেয়াসহ ৯ মাসে এই বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৯৮ মিলিয়ন (২৯.৮ কোটি) ডলার।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০