শেয়ার বিজ ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও পেসোর মান কমে যাওয়ায় আর্জেন্টিনার অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণ সহায়তাও চেয়েছে। তবে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডি’স আর্জেন্টিনার অর্থনীতির দুরবস্থার জন্য কাঠামোগত দুর্বলতাকে দায়ী করেছে। এ নিয়ে দেশটিকে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। খবর সিনহুয়া।
এক প্রতিবেদনে মুডি’স বলেছে, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ প্রবাহের ওপর অধিক নির্ভরতা এবং অভ্যন্তরীণ ছোট আর্থিক ও ঋণ বাজার আর্জেন্টিনার অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে।’ সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, গত দুই সপ্তাহে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে হয়তো কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, তবে এটি চলতি ২০১৮ সালের প্রবৃদ্ধিকে টেনে ধরবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর্জেন্টিনার মুদ্রা পেসোর মান ক্রমাগত কমছে। এতে মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মৌলিক চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছেন দেশটির নাগরিকরা। এতে কমছে ভোক্তা খরচ। তাই পেসোর মান বাড়াতে গত দুই সপ্তাহে তৃতীয়বারের মতো সুদের হার বাড়িয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষে এখন সুদের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশে। এছাড়া আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছে দেশটি। আইএমএফও ঋণ সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে।
মুডি’সের আর্জেন্টিনার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র ক্রেডিট অফিসার গ্যাব্রিয়েল টরেস বলেছেন, ‘সরকারের সুদের হার বাড়ানোর উদ্যোগে ২০১৮ সালে বিনিয়োগ কমবে। এতে প্রবৃদ্ধিতে বড় ধাক্কা খাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’
গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সুদের হার বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করে। এর এক দিন আগেই ৩০ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৩ দশমিক ২৫ করা হয়েছিল। আর এ হারও এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।
পেসোর মান কমে যাওয়ায় ২০১৭ সালে আর্জেন্টিনার মূল্যস্ফীতি ২৫ শতাংশে পৌঁছায়। ভেনিজুয়েলা ছাড়া ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে গত বছর এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি। যদিও ২০১৬ সালেও দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ৪৭ শতাংশ। সে তুলনায় মূল্যস্ফীতি কমলেও পণ্যের দামের তুলনায় আয় বাড়েনি। ফলে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ জনগণ। চলতি বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট মরিসিও ম্যাক্রি ক্ষমতায় বসার দুই বছর পরও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। এর কারণে তার জনপ্রিয়তাতেও ভাটা পড়ছে। তবে দেশের জন্য সঠিক কাজ করছেন বলেই মনে করছেন তিনি।
এর আগে ১৯৮২, ১৯৮৯ এবং ২০০১ সালে আর্থিক মন্দার মুখে পড়ে দেশটি। এর পর থেকে পেসোর ওপর নির্ভরতা কমাতে ডলারে সঞ্চয় শুরু করেন দেশটির নাগরিকরা। তবে সম্প্রতি দেশটির অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, শিগগিরই আর্জেন্টিনায় নিয়ন্ত্রণে আসবে মূল্যস্ফীতি।
আর্জেন্টিনার অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে মুডি’সের সতর্কতা
