নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ইতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ করে গতকাল। আর্থিক খাতের মধ্যে বিমা ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) ওপর ভর করে ইতিবাচক ধারায় ফেরে সব সূচক। বৃদ্ধি পায় ডিএসইর মোট লেনদেন। এ সময় বড় মূলধনি খাতের কোম্পানিগুলোর অধিকাংশের শেয়ারদরও বৃদ্ধি পায়।
লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার-বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গতকাল সকাল থেকেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখায়। যদিও লেনদেন শুরুর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে সূচকের উত্থানের সঙ্গে কিছুটা নি¤œমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে পরবর্তীতে পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় সূচক। কিন্তু দিন শেষে সূচক পূর্ববর্তী দিনের চেয়ে চার দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে লেনদেন শেষ করে।
জানা গেছে, আর্থিক খাতের শেয়ার বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি দেখা যায়। মৌলভিত্তির এ খাতগুলোর কোম্পানি তুলনামূলক বেশি নির্ভরশীল হিসেবে বিবেচিত পুঁজিবাজার। টানা সূচকের পতনের মধ্যেও একপর্যায়ে বিনিয়োগকারীরা এ খাতের ওপরই নির্ভরশীল থাকতে চান। গতকালও সেই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
বিনিয়োগকারীদের মতে, গুজব ও শেয়ার কারসাজির তথ্য প্রচার না হলে সাধারণত কেউ আর্থিক খাতের শেয়ার ছেড়ে দেন না। গতকাল শেয়ার বিক্রির চেয়ে ক্রয় প্রবণতাই ছিল বেশি। এজন্য এ খাতটির ওপর ভর করেই এগিয়েছে ডিএসইর সব সূচক।
লেনদেন তথ্য বলছে, গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৪১টি কোম্পানির ৪০৯ কোটি ৬১ লাখ টাকার লেনদেন হয়। মোট লেনদেনের ৯ শতাংশ অবদান রাখে ব্যাংক খাত। এ সময়ে ব্যাংক খাতের মোট ৩০ কোম্পানির মধ্যে শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ১০টির ও হ্রাস পায় ১৫টির।
এছাড়া গতকালের লেনদেনে সর্বোচ্চ ২৩ শতাংশ অবদান রাখে সাধারণ বিমা খাত। লেনদেন হওয়া ৩৫ কোম্পানির শেয়ারদর পূর্ববর্তী দিনের চেয়ে বেড়েছে ও কমেছে ১০টির। দিন শেষে গতকাল বিমা খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের। এছাড়া এনবিএফআই খাতটি মোট লেনদেনে তিন শতাংশ অবদান রাখে। লেনদেনে অংশ নেওয়ার পরে ২১টির মধ্যে ১১টির শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়, কমে যায় তিনটির।
তথ্য অনুযায়ী, বড় খাতগুলোর মধ্যে অধিকাংশের শেয়ারদর পতন হয় ব্যাংক, সিমেন্ট এবং খাদ্য ও অনুষঙ্গ খাতের। বড় মূলধনি খাতের মধ্যে সবচেয়ে ইতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ করে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত।
লেনদেন শেষে খাতটি সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়। ডিএসইর মোট লেনদেনে খাতটি পাঁচ শতাংশ অবদান রাখে। এছাড়া প্রকৌশল খাত ১৫ শতাংশ অবদান রাখে। এর বাইরে ওষুধ ১৩ শতাংশ, বস্ত্র এক শতাংশ, জীবন বিমা দুই শতাংশ ও ট্যানারি খাত তিন শতাংশ অবদান রাখে।
অপরদিকে পতনের ধারায় সর্বোচ্চ ছিল সিমেন্ট খাত। গতকাল খাতটির সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ অবদান ছিল লেনদেনে। বাজারের উত্থানে ভূমিকা রাখে ন্যাশনাল টিউবস, ওয়াটা কেমিক্যালস, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স। ব্যাংক খাতের মধ্যে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। অন্যান্য খাতের মধ্যে স্টাইল ক্রাফট, ন্যাশনাল পলিমার ও ফরচুন শুজ।
এছাড়া ডিএসইতে ব্লক মার্কেটে সর্বোচ্চ দুই কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয় রেনাটার।