আর্থিক নীতির সংস্কার হলে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ আরও বাড়বে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের আর্থিক খাতের কিছু নীতি সংস্কার হলে এখানে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর আরও সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর জন ফে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি মূলত পোশাকনির্ভর। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা, আইটি, শিক্ষা, ও কৃষির মতো বেশ কিছু খাত রয়েছে, যেখানে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়তে পারে। এসব খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও রাজস্বনীতি এবং মেধাস্বত্ব আইনের কিছু জায়গায় সংস্কার ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

রাজধানী ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে গতকাল সোমবার ‘বাংলাদেশ-ইউএসের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) গবেষণা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশ যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটি আমাদের জন্য একটি বড় আমদানির উৎসও। সম্প্রতি তাদের সঙ্গে আমাদের আমদানি বেড়েছে। এরপর ইউএস আমাদের এখানে যে পরিমাণ এফডিআই দেয়, তা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশে তাদের অবস্থান ভালো।

আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ অল্প কয়েকটি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি করে। আমাদের চেয়ে জিডিপিতে আকারে অনেক ছোট দেশও বাংলাদেশের চেয়ে বেশিসংখ্যক পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জন ফে বলেন, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধা (জিএসপি) অতীত বিষয়, এটি এখন আলোচনার বিষয় নয়। কারণ মার্কিন কংগ্রেস এখনও এটিকে অনুমোদন করেনি। তবে রপ্তানি বাড়ানোর জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়, তা কমানোর

উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তবে তার জন্য শর্তগুলো পালন করতে হবে বাংলাদেশকে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত মার্কিন ভিসানীতির কারণে দুই দেশের বাণিজ্যের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি নাÑএ প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমএইর প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, আমরা ২০২৬ সালে এলিডসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছি। এলডিসিভুক্ত দেশ হলেও যাতে আমাদের আরও ছয় বছর জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস, অথবা জিএসপি দেয়া হয়, আমরা সেজন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বাজারে আমরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। আমরা আগামী ছয় বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধা চাচ্ছি। পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সম্মেলনেও যাতে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে মতামত দেয়, সেজন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেনÑবিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিকেএমইএ সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান ও শাশা ডেনিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শামস মাহমুদ প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০