আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছাকৃত খেলাপি ধরতে পৃথক ইউনিট হচ্ছে 

নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্ত করতে পৃথক ইউনিট গঠনের নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ ইউনিট গঠনের নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা কোনো রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য হবেন না। অন্যথায় তাদের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গাড়ি, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট প্রভৃতি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানি কর্তৃক কোনো ঋণগ্রহীতাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কর্তৃক ঋণ পরিশোধপূর্বক ওই তালিকা থেকে অব্যাহতি প্রাপ্তির পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন না।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের এক সার্কুলারে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি হওয়ার পর ওই ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা কি না তা শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। সেগুলো হলোÑখেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদনের নিমিত্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অব্যাবহিত দুই ধাপ নিচের কর্মকর্তার অধীনে প্রধান কার্যালয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট চলতি বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে গঠন করতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে প্রদত্ত ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতার সংজ্ঞা মোতাবেক ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক তাদের কোনো খেলাপি ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি হাচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা কি না তা শনাক্ত করতে হবে। খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার তৎপরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে ওই ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি কি না তা নিরূপণের লক্ষ্যে বিবেচ্য বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে ফাইন্যান্স কোম্পানির সংশ্লিষ্ট ইউনিট কর্তৃক পর্যালোচনাপূর্বক শনাক্ত করতে হবে। তবে যৌক্তিক কারণে বর্ণিত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা সম্ভব না হলে ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে ওই সময় আরও ৩০ দিন বৃদ্ধি করা যাবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা চূড়ান্তকরণের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে শনাক্ত হলে তা চূড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এর মধ্যে কোনো খেলাপি ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে শনাক্তকৃত হলে শনাক্তকরণের কারণ উল্লেখপূর্বক সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতাকে তার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ১৪ কর্মদিবস সময় প্রদান করতে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রদত্ত বক্তব্য গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হলে বা না হলে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ কর্তৃক এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার লক্ষ্যে ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদন নিতে হবে। তবে জাতীয় শিল্প নীতিতে বর্ণিত সংজ্ঞা অনুযায়ী, বৃহৎ শিল্প খাতের ৭৫ কোটি ও তদূর্ধ্ব, মাঝারি শিল্প খাতের ৩০ কোটি ও তদূর্ধ্ব এবং অন্যান্য খাতের ১০ কোটি ও তদূর্ধ্ব স্থিতিসম্পন্ন ঋণের ক্ষেত্রে ফাইন্যান্স কোম্পানির নির্বাহী কমিটির পরিচালক পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চূড়ান্তকরণের পর সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চূড়ান্তকরণের বিষয়টি গ্রাহক কর্তৃক অবহিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ওই বিষয়ে অবহিত হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের কাছে আপিল করতে পারবে মর্মে ফাইন্যান্স কোম্পানির পত্রে উল্লেখ থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল না করলে এ বিষয়ে ফাইন্যান্স কোম্পানির আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তবে সংক্ষুব্ধ ঋণগ্রহীতা কর্তৃক আপিল করা হলে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০