আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপির হার ২১ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনিয়ম ও দুর্নীতির আস্তানায় পরিণত হয়েছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। যাচাই-বাছাই না করে নামে-বেনামে ঋণ দেয়ায় খেলাপির বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না বেশিরভাগ ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)। অনুমোদিত ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২৩২ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ২০ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

হাতে গোনো কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের অবস্থা নাজুক। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও ফাস ফাইন্যান্স। কারণ এই তিন প্রতিষ্ঠানের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠান তিনটির মোট ঋণের স্থিতি ৩ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে প্রতিষ্ঠান তিনটির গড় খেলাপি ৯০ দশমিক ৯৯ শতাংশের বেশি। এককভাবে বিআইএফসির খেলাপি ৯৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৮৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ ও ফাস ফাইন্যান্সের ৮৯ দশমিক ২২ শতাংশ।

একইভাবে ফার্স্ট ফাইন্যান্সের খেলাপি ৮৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ৭৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ ও ফিনিক্স ফাইন্যান্সের ১৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রথম ত্রৈমাসিকের (জানুয়ারি-মার্চ) প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জানুয়ারি থেকে মার্চ খেলাপি ঋণ ১ হাজার ২১৬ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। এটি গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ১৬ কোটি টাকা, যা তিন মাসে বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ২৩২ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে ঋণ দেয়ার সময় যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দিয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক প্রতিষ্ঠানের ঋণ খুবই খারাপ অবস্থানে। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ পঞ্চাশ থেকে নব্বই শতাংশের মধ্যে। এসব প্রতিষ্ঠানের আমনাতকারীরা ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, করোনার কারণে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরাও নানা সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু সুবিধা শেষ হওয়ার পর যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে সে ধরনের মানসিকতা তারা দেখাচ্ছেন না। অনেকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হচ্ছেন। ঋণখেলাপিদের থেকে রক্ষা পেতে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি না করলে ঋণগ্রহীতারা অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঋণ পরিশোধে করতে চাইবেন না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০