বসে বসে কাজ আর ধূমপান সমান সমস্যা তৈরি করে এক গবেষণায় পাওয়া গেছে এমন তথ্য। দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে নানা রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। মেদ বেড়ে যাওয়া হতে শুরু করে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ডায়াবেটিসের মতো রোগ। হতে পারে হৃদরোগও। এমনকি এর কারণে অকালে প্রাণও ঝরে যেতে পারে।
কেন এমন হয় বসে থাকলে? এর কারণ বুঝে ওঠা কঠিন নয়। অত্যধিক বসে থাকার ফলে শরীর একটা জায়গায় স্থির হয়ে থাকে। ফলে ওজন বেড়ে যায়। একই সঙ্গে বেড়ে যায় উচ্চরক্তচাপ।
সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়াম করলে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে। তবে মাত্রাতিরিক্ত বসে থাকা শরীরের কোষের জন্য ক্ষতিকর। সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অব এপিডোমিউলোজিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সান ডিয়াগোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ফ্যামিলি মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’-এর আলাদিন সাদয়াবের নেতৃত্বে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণাটির মুখ্য বিষয় হচ্ছে: ক্রোমোজমে মাত্রাতিরিক্ত বসে থাকার বাজে প্রভাব। তারা ‘উইমেন্স হেলথ ইনিশিয়েটিভ’-এ নথিভুক্ত দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভোগা প্রায় ১৫০০ বয়স্ক মহিলার রক্ত নমুনা হিসেবে নিয়েছে। এখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে টেলোমেরেসকে। এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি কোষ। যার মাধ্যমে জানা যায় কোষের বয়স কীভাবে প্রভাবিত হয়।
এর পাশাপাশি প্রশ্ন করেও মানুষের কার্যপরিক্রমা সম্পর্কে তারা ধারণা নিয়েছেন। দৈনিক ৩০ মিনিট অথবা তারচেয়ে বেশি শারীরিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া মহিলাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যারা দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করেন না, অধিকাংশ সময় বসে কাটান (১০ ঘণ্টা, বা তার চেয়ে বেশি), তাদের টেলেমোরস ক্ষুদ্র।
সাদায়েবের তথ্যমতে, বসা ও পর্যাপ্ত শারীরিক কাজের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় টেলেমোরসের দৈর্ঘ্য ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে যায়। যারা দিনে ১০ ঘণ্টার চেয়ে বেশি বসে থাকেন, শারীরিক কার্যক্রমে অংশ নেন না, তারা দ্রুত বুড়ো হয়ে যান।
তবে অতিরিক্ত বসে থাকার ফলে সংঘটিত বাজে প্রভাব থেকে কোষগুলোক মুক্ত রাখতে কী পরিমাণ শারীরিক কার্যক্রম পরিচালনা করা জরুরি, তা এখনও পরিষ্কার নয়। সাদায়েবের গবেষণা পরিষ্কার করেছে যে, বসে থাকার ফলে শরীরের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।