Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:08 am

আর কালক্ষেপণ নয়

সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলেছে, প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বাংলাদেশ সাত ধাপ এগিয়েছে। এক্ষেত্রে অবকাঠামো উপখাতে দেশটি তিন ধাপ এগিয়ে ১১১তম হয়েছে। এ খবরের মধ্যে গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত একটি সংবাদ পাঠককে কিছুটা হলেও হতাশ করবে।

অবকাঠামোগত উন্নয়নে যখন আমাদের সাফল্য বেড়ে চলেছে, তখন ‘দফায় দফায় সময় বাড়ানোর পরও দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি’ ধরনের খবর দুঃখজনক। আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী সেতুটি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। চলতি বছরও এটি চালু করা নিয়ে সংশয় রয়েছে তিস্তার দুই পারের রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দাদের।

খবরে বলা হয়, ২০১৪ সালের জুনে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তখন এর নির্মাণকাজের অগ্রগতি দেখায় ৪৫ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে এক বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। আর এ এক বছরে কাজ হয় মাত্র ২০ শতাংশ। ফলে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত আবারও সময় বাড়ানো হয়। সে সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ না হওয়ায় তৃতীয় দফায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয় সময়সীমা। তাতেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি মাস (অক্টোবর) পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। এভাবে দফায় দফায় সময় বাড়ানো হলেও কাজের তেমন অগ্রগতি নেই।

কোনো অবকাঠামো নির্মাণে সাধারণত তিনটি বিষয়Ñখরচ, সময় ও মান বিবেচনা করা হয়। খরচ একটি বড় বিষয়। কম সময়ে করা গেলে প্রাক্কলিত দরেই নির্মাণ সম্পন্ন করা যায়। কালক্ষেপণ হলে খরচ বাড়ে বিভিন্নভাবে। বাড়ে ব্যবহার্য সামগ্রীর দাম, পরিবহন খরচ, শ্রমিকের জন্য ব্যয় প্রভৃতি। অনেক ক্ষেত্রে তাই খরচ কিছুটা বেশি হলেও দ্রæত নির্মাণ শেষ করাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণে দেরি হওয়ায় এটির ব্যয় বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা অমূলক নয়। এর আগে দেশের বিভিন্ন বড় স্থাপনার নির্মাণকাজ ধীরগতিতে হওয়ায় ব্যয় অনেক বেড়ে যাওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে চোখের সামনেই। এতে জনসাধারণের ভোগান্তিই শুধু বাড়ে না, সার্বিক উন্নয়নেও বিরূপ প্রভাব পড়ে।

এলজিইডি’র বরাতে আমাদের প্রতিবেদক জানিয়েছেন, বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুরের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (জিআরডিপি) অর্থায়নে ১২১ কোটি ৬৫ লাখ ৭৪ হাজার ১০৩ টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। এর নির্মাণকাজ তত্তাবধানে থাকা প্রকৌশলী যদিও দাবি করছেন সেতুটির ৯৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে; বাকি কাজ অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হবে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা সেটি মনে করেন না তিক্ত অভিজ্ঞতার নিরিখেই। আমরা চাইব, এক্ষেত্রে আর কালক্ষেপণ হবে না। দ্রুতই সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।